- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
যে ছেলে জাস্ট ২ দিন আগেই স্নিগ্ধর ৩ টা সেলাই লাগা আঙুলের ব্যাপার এ হসপিটাল এ বসে বলছিল “ ভাইয়া একটু আগে তুমি দেখলে সহ্য করতে পারতা না, যেই রক্ত পড়তেছিল। আমার খুব খারাপ লাগতেছে। এই স্নিগ্ধ তুই নড়িছ না, ডাক্তার, প্রেসক্রিপশন সব আমি নিয়া আসতেছি। ভাইয়া তুমি স্নিগ্ধর সাথে থাকো।”
আমাদের মধ্যে সবচেয়ে মিতব্যয়ী থাকা ভাইটা নিজের কার্ড থেকে ইচ্ছামতো খরচ করতে থাকলো। শহীদ হওয়ার ঠিক আগেরদিন ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় ২ ঘণ্টা ধরে গল্প করতে করতে বলছিলো “ ভাইয়া, আমার কী আরেকটু সোশ্যাল হওয়া দরকার? ভার্সিটি তে এতদিন ধরে থাকা তে একটু কম মেশা হইছে এইখানে। তোমার কী মনে হয় স্টুডেন্টদের উপর এই রাষ্ট্র গুলি চালাবে? স্টুডেন্টদের উপর গুলি চালানোর ফলাফল তো কখনোই ভালো হয় নাই। ৫২ বলো, ৬৯ বলো, ৭১ বলো সবসময় ই তো, আমাদের ইতিহাসগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে হলেও তো এই রাষ্ট্র কখনও স্টুডেন্টদের উপর গুলি চালাবে না।”
আমি চিন্তা করি ঠিক তার পরদিন এই আমার ভাই মীর মুগ্ধ যখন কপালের মাঝখানে গুলিবিদ্ধ হলো তখন সে ঠিক কী ভাবছিল? তার সেই আত্মবিশ্বাস যখন ভুল প্রমাণ হলো তার কাছে, সে কতটা অবাক হয়েছিল?
নিজের ভাই এর রক্ত দেখে ভয় পাওয়া ছেলেটার এতগুলো তাজা রক্ত, তার পুরো শরীর এর সব রক্ত যে এই রাস্তায় লুটিয়ে পড়ল, পানি ভর্তি সেই বোতল যে জানান দিল "এখন থেকে পানি খাওয়ার সময় হলেও এই রক্তের কথা ভাইবেন, পারছি কী এই রক্তের মূল্য দিতে?"
লেখা: জুলাই আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধ’র ভাই মীর স্নিগ্ধ-এর টাইমলাইন থেকে নেওয়া