- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
দেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গঠিত সেল বা কমিটি থাকলেও এদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যৌন হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ দেওয়ার পর বিচার পাওয়ার আশঙ্কা কম, বরং হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অনেক শিক্ষার্থী এমন কমিটির অস্তিত্বও জানে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ উঠলেও শাস্তির হার খুব কম। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির ৮-১০টি অভিযোগ জমা পড়েছে, তবে কমিটি এখন পর্যন্ত কোনো মামলা নিষ্পত্তি করতে পারেনি। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র কয়েকটি নিষ্পত্তি হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭টি অভিযোগের মধ্যে ২২টি নিষ্পত্তি হলেও ৫টি এখনও প্রক্রিয়াধীন।
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, অভিযোগ করলে নাম প্রকাশ হবে এবং প্রশাসন বা শিক্ষকের ঘনিষ্ঠতার কারণে বিচার হবে না। অনেকেই তাই অভিযোগ দিতেও অনীহা প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠন করা কমিটিগুলো মূলত লোক দেখানো এবং কার্যত নিষ্ক্রিয়।
আইনজীবী শাহিনুজ্জামান বলেন, “নিষ্ক্রিয় থাকা সরাসরি হাইকোর্টের নির্দেশনা লঙ্ঘন। এর দায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিতে হবে। আদালতের নির্দেশনা মানা না হওয়া এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি দিন দিন সমস্যা বাড়াচ্ছে।”
ন্যাশনাল কো-অরডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান এ্যানি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অহরহ এসব ঘটনা ঘটছে। তবে শিক্ষার্থীরা কোথায় অভিযোগ জানাবে সে বিষয়ে প্রশাসনের উদ্যোগ কার্যকর নয়। অভিযোগ বক্স থাকলেও শিক্ষার্থীরা জানে না কোথায় তা জমা দিতে হবে। যদি কমিটি সক্রিয়ভাবে কাজ করত, হয়রানির মাত্রা অনেক কমত।”
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে নিয়মিত সভা হয় না, অভিযোগের জন্য নির্দিষ্ট হেল্পলাইন বা ওয়েব ফর্ম নেই, এবং মৌখিকভাবে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলের কার্যক্রম প্রায় নিষ্ক্রিয়।