- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদের নিথর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে নগরীর কাজির দেউড়ি মোড়সংলগ্ন ক্লাবটির ৩০৮ নম্বর কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন জানান, রোববার বিকেল ৫টার দিকে হারুন-অর-রশিদ চট্টগ্রাম ক্লাবে অবস্থান নেন। তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত তার কোনো সাড়া না পেয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে কক্ষে ঢোকে এবং তার লাশ উদ্ধার করে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে চূড়ান্ত কারণ জানতে মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে, এবং সেখানে ময়নাতদন্ত করা হবে।
১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পদাতিক কোরে কমিশন পাওয়া হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সেনা ক্যারিয়ারে অসাধারণ অবদান রাখেন। কুমিল্লার ৪র্থ ইবিআর-এ প্রথম পোস্টিং পাওয়ার পর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে জর্জিয়ায় বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
একাডেমিক মনোভাবের জন্য পরিচিত এই সেনা কর্মকর্তা আর্মি স্টাফ কলেজ এবং পদাতিক ও কৌশল স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার মেয়াদকালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশি সার্ভেয়ার অপহরণসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিল সেনাবাহিনী।
অবসরের পর তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি হিসেবে যুক্ত হন এবং পরে ডেসটিনি গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ডেসটিনির অর্থ জালিয়াতি মামলায় তিনি একসময় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন, তবে পরে শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারণে জামিনে মুক্তি পান।
হারুন-অর-রশিদ ছিলেন আর্মি গলফ ক্লাবের প্রথম সভাপতি। ২০১৫ সালে এক আলোচনায় তিনি পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করেন।
তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা সমাজ ও রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন বলেন, “সকালে খবর পেয়েছি, তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা শোকাহত।”