- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সরাসরি জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য নির্মিত পাইপলাইন আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। সফল প্রাক-কমিশনিংয়ের পর এই উদ্যোগ দেশের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন যুগের সূচনা করল। আগে নৌপথে তেল পৌঁছাতে সময় লাগত প্রায় ৪৮ ঘণ্টা, এখন পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র ১২ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবে তেল।
চট্টগ্রামের গুপ্তখালে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডেসপাস টার্মিনালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। এ সময় জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল মুহাম্মদ হাসান-উজ-জামানও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। প্রায় ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নেটওয়ার্কে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২৪১.২৮ কিলোমিটার এবং গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি ব্যাসের ৮.২৯ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। পথে ২২টি নদী ও খাল অতিক্রম করে তৈরি হয়েছে ৯টি স্টেশন, আধুনিক ডিপো ও একাধিক রিজার্ভার।
প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানান, ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষামূলক পরিবহনে কোনো সিস্টেম লস ছাড়াই প্রায় ৫ কোটি লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। বর্তমানে পাইপলাইন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ মেট্রিক টন তেল পরিবহন সম্ভব, যা বছরে ২.৭ থেকে ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত করা যাবে। ভবিষ্যতে এই ক্ষমতা ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পাইপলাইন চালুর ফলে বছরে অন্তত ২২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে এবং চুরি ও সিস্টেম লস অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে। নিরাপত্তা ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে ঢাকায় সরবরাহের প্রতিটি ধাপ মনিটরিং করা হবে।