- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আসিফ মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টার
দেশজুড়ে ভূমিকম্পের আতঙ্ক চলমান থাকলেও এবার নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি দুর্বল নিম্নচাপ দ্রুত ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী আবহাওয়াব্যবস্থায় পরিণত হচ্ছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন—আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এটি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওড়িশাটিভি জানায়, নিম্নচাপটি বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে ঠিক কোনদিকে যাবে—তা এখনো নিশ্চিত নয়।
আবহাওয়াবিদ সন্দীপ পট্টনায়ক জানান, মালাক্কা প্রণালী ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় নিম্নচাপটি ক্রমাগত শক্তি সঞ্চয় করছে। ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশন (এমজেও) পর্যায় অতিক্রম এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে শক্তিশালী বাতাসের প্রবাহ নিম্নচাপকে আরও তীব্র হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। তার ভাষায়, “সমুদ্রের বিস্তৃত উন্মুক্ত জলরাশি ও শীতল বাতাসের অনুপ্রবেশ না থাকা নিম্নচাপের শক্তি বাড়াচ্ছে। ফলে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি।”
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, নিম্নচাপটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ এবং পরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘সেনিয়ার’।
তাদের মতে, ২৮–২৯ নভেম্বর এটি মধ্য ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ১–২ ডিসেম্বরের মধ্যে এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশ উপকূলের মধ্যে কোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে।
তবে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণাঙ্গ রূপ না নেওয়া পর্যন্ত আঘাত হানার নির্দিষ্ট স্থান বলা সম্ভব নয়।
এই সিস্টেমটির সক্রিয়তা ২১ নভেম্বর থেকে ২ বা ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে। বিশেষত ২৬–৩০ নভেম্বরের মধ্যে এর তীব্রতা সর্বাধিক হতে পারে। ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে বাতাসের গতি: ৫০–৬০ কিমি/ঘণ্টা, ২৬ নভেম্বর গতি বেড়ে: ৬০–৭০ কিমি, কিছু স্থানে ৮০ কিমি ছাড়াতে পারে, ২৭ নভেম্বর বাতাসের গতি পৌঁছাতে পারে: ১০০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি নজরদারির দাবি রাখে। উপকূলীয় এলাকার জনগণকে আবহাওয়া অধিদফতরের নিয়মিত আপডেট অনুসরণ এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।