- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সারা দেশে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা উদযাপিত হয়েছে। ইতিহাস, শোক ও ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল এই দিনে, কারবালার প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদতের স্মরণে দিনটি ইসলামিক ইতিহাসে এক শোকাবহ ও গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচিত।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে এই উপলক্ষে এক বাণী প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, অত্যাচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ইসলামের সাহসী সৈনিকরা এই আত্মত্যাগের ইতিহাস চিরদিনের জন্য স্বীকৃত হয়ে থাকবে। তারা যেমন জুলুমের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করবেন, তেমনি মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাবেন। আসুন, এই গুরুত্বপূর্ণ দিনের মর্যাদা অনুধাবন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য বিভিন্ন নেক কাজ করি। সমাজে সাম্য, ন্যয় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি, পবিত্র আশুরার এই দিনে মুসলিম উম্মার ঐক্য, সংহতি এবং অগ্রগতি কামনা করছি।
এদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান, নফল রোজা এবং কুরআন পাঠের মাধ্যমে মুসল্লিরা বিভিন্ন আমলে মগ্ন ছিলেন। শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে বিশাল মহররমের তাজিয়া মিছিল বের হয়।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গতকাল বাদ জোহর ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন মুফতি মো. মুজির উদ্দিন এবং সভাপতিত্ব করেন ড. মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ।
এদিকে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও শিয়া মুসলিমরা কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে স্মরণ করে পবিত্র আশুরা পালন করেছেন। নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ইরাকে এই দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। গতকাল (রোববার, ৬ জুলাই) সকালে হাজার হাজার মানুষ কারবালায় জড়ো হন।
স্মরণ করা হয় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ছোট নাতি ইমাম হোসাইনকে, যাঁকে ১০ মহররমে শোকের দিন হিসেবে পালন করে শিয়া মুসলিমরা। এই দিনটি উপলক্ষে তারা শোক মিছিল করে, পাশাপাশি ইস্পাতের শিকল দিয়ে পিঠে আঘাত করেও ইমাম হোসাইনের স্মৃতি পালন করেন। ভারত সহ বাইরের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিয়া সম্প্রদায় একইভাবে ইমাম হোসাইনের শোক ও সম্মান প্রকাশ করছে। উল্লেখ্য, ইমাম হোসাইন ৬৮০ খ্রিস্টাব্দ বা হিজরি ৬১ সনে কারবালায় ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।
পৃথিবীর প্রথম থেকেই মুহররম মাসের ১০ তারিখ বা আশুরার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দিনটি ঘটে ইমাম হোসাইনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ। এর মাধ্যমে দিনটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।