- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্ট ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের সূচনা; এবার তাঁদের লক্ষ্য বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে নতুন করে গড়ে তোলা। রোববার রাত সোয়া আটটার দিকে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এক পথসভায় তিনি বলেন, ‘পূর্বে আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার সেই লক্ষ্য বিস্তৃত হয়ে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমরা গণভবনের নিয়ন্ত্রণ পেয়েছি, এখন জাতীয় সংসদ জয় করার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি। আগামীর নির্বাচন তরুণ প্রজন্মের বিজয়ের উৎসবে পরিণত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এর আগে দেশে ন্যায়বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। খুনি শেখ হাসিনার বিচার দেখতে চায় এই প্রজন্ম। আমরা চাই একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও জনমুখী নতুন সংবিধান। দেশের তরুণরা আজ অঙ্গীকার করছে—তারা বাংলাদেশকে একটি নতুন শাসনব্যবস্থার পথে এগিয়ে নেবে।’
পথসভাটি ছিল ‘জুলাই পদযাত্রা’র সমাপনী আয়োজন, যা সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীর রেলগেট এলাকা থেকে শুরু হয়ে নিউমার্কেট, অলকার মোড়, গণকপাড়া, সাহেববাজার, আলুপট্টি ঘুরে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
নাহিদ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমরা রাজপথে নেমেছিলাম আদর্শ ও পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে। আমার ভাই আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন। রাজশাহীর অনেক তরুণ এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমাদের সংগ্রাম ছিল কেবল সরকার পতনের জন্য নয়, বরং একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য।’ তিনি স্বীকার করেন, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও ভুল সিদ্ধান্তে সংস্কারের অগ্রগতি থেমে যায়। ‘আমাদের মধ্যে তখন কিছু ভুল ছিল, কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু আজ আমরা শপথ করছি—আর সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করব না। পরিবারতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে আমরা মেধাভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলব,’ বলেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘কেউ কেউ বলে জুলাই আবেগের বিষয় মাত্র, কোনো আইনি ভিত্তির প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমরা তাদের দেখিয়ে দিতে চাই—৩ আগস্ট আমরা আবারও রাজপথে নামব মুজিববাদী সংবিধানের বিরোধিতায়। যারা এই আন্দোলনকে আইনি কাঠামোয় স্থান দিতে চায় না, তারা আসলে মুজিববাদের নতুন রক্ষক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আমাদের কাজ হবে এই পাহারাদারদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
পথসভাটি সঞ্চালনা করেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক ইমরান ইমন এবং রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মোবাশ্বের আলী।