- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সম্প্রতি আমাদের সৌরজগতের প্রান্তে আরও একটি নতুন বামন গ্রহের (Dwarf Planet) সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কার শুধু মহাকাশ বিজ্ঞানে নয়, বরং পৃথিবীজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিস্তর কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। সৌরজগত ও তার বাইরের জগত সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ায় এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করছেন গবেষকেরা। নতুন এই বামন গ্রহের অবস্থান কুইপার বেল্ট অঞ্চলে, যা নেপচুন গ্রহের কক্ষপথের বাইরের এক বিস্তীর্ণ বরফাচ্ছন্ন এলাকা। এখানেই প্লুটোর মতো আরও অনেক ছোট ছোট গ্রহ-আকারের বস্তু অবস্থান করছে। তবে এবারের বামন গ্রহটি অন্যগুলোর তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন বামন গ্রহটি অন্যান্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বড় এবং এর পৃষ্ঠে কিছু ‘অদ্ভুত’ রাসায়নিক উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেখানে প্রাচীন বরফ, অ্যামোনিয়া, এমনকি সম্ভাব্যভাবে অর্গানিক যৌগের সংকেত পাওয়া গেছে, যা প্রাণের মৌলিক উপাদান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. এলেনা মার্টিনেজ বলেন, “এই ধরনের আবিষ্কার আমাদের দীর্ঘদিনের প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়—বহির্বিশ্বে কি প্রাণের সম্ভাবনা রয়েছে? এ বামন গ্রহ হয়তো সেই জবাবের দিকে আমাদের নিয়ে যেতে পারে।” ২০০৬ সালে প্লুটোকে ‘পূর্ণগ্রহ’ থেকে বাদ দিয়ে ‘বামন গ্রহ’ হিসেবে পুনঃশ্রেণিকরণ করা হয়। তখন থেকেই এই ধরনের গ্রহ নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। এবার নতুন বামন গ্রহের আবিষ্কারের ফলে সেই আলোচনা যেন নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ—এরই মধ্যে নতুন এই গ্রহ নিয়ে গবেষণার জন্য নিজস্ব পর্যবেক্ষণ উপগ্রহের ডেটা পর্যালোচনা শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আগামী বছরগুলোর মধ্যে এ গ্রহে রোবটিক মিশন পাঠানোর পথ তৈরি হতে পারে। একদিকে যখন বিজ্ঞানীরা গবেষণায় ব্যস্ত, অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বামন গ্রহের ছবি, নামকরণ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। অনেকে বলছেন, হয়তো ভবিষ্যতে সেখানে মানুষ পাঠানো যাবে, কেউ বলছেন, এটি হতে পারে ‘দ্বিতীয় প্লুটো’। অনলাইন পিটিশনে এর নাম ‘মিনি প্লুটো’ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এই নতুন গ্রহ নিয়ে গল্প ও কল্পনা তৈরি হচ্ছে। ছবি : সৌরজগতের আটটি গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে (এএফপি)