বাজেট সংশোধনের দায়িত্ব পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে দিল অন্তর্বর্তী সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | PNN: 

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংশোধনের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল আগামী মাসে শেষ করার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার শেষ পর্যন্ত এই পরিকল্পনা থেকে সরে এসে বাজেট সংশোধনের দায়িত্ব পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার যাতে তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকারকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট সংশোধন করতে পারে।

গতকাল সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এবং বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য প্রায় সাড়ে আট লাখ কোটি টাকার ব্যয়ের প্রাথমিক প্রাক্কলন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নতুন বাজেটও চূড়ান্ত করবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার।

চলতি অর্থবছরে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের প্রথম সভা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অংশ নেন।

সভায় বাজেট সংশোধন চূড়ান্ত করা না হলেও মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল; এটি বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যদিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ৫.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ না হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমানো হয়েছে।

এছাড়া আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি এবং ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশের বেশি।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত প্রতি বছর ডিসেম্বরে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় রাজস্ব আহরণ, এডিপি বাস্তবায়ন, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমদানি-বিনিয়োগ চিত্রসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করা হয়। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন এবং সংশোধনের কাজ শুরু হয়, এবং জানুয়ারিতে সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হয়। তবে এবার নির্বাচনের কারণে এই প্রক্রিয়া পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।