- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
আট দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সাতজন বাংলাদেশি আলেম, যাঁরা সম্প্রতি আফগানিস্তানে গিয়ে তালেবান সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী ও মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
তাঁদের এই সফরের আয়োজক ছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ‘প্রোস্পার আফগানিস্তান’, যারা মূলত যুদ্ধবিধ্বস্ত মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার ও সহায়তা নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি এর আগে ইউরোপ থেকে ইসলামিক স্কলারদের দল আফগানিস্তানে নিয়ে গিয়েছিল, এবার প্রথমবার বাংলাদেশ থেকে আলেমদের একটি প্রতিনিধিদল সফর করল।
মাওলানা মামুনুল হক জানিয়েছেন, সফরে তাঁরা আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোল্লা আমির খান মুত্তাকি, পানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী মোল্লা আবদুল লতিফ মনসুর, শ্রম ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী মোল্লা আবদুল মান্নান এবং প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়া খোস্ত প্রদেশে গভর্নরের সঙ্গেও তাঁদের আলোচনা হয়।
আলেমরা দাবি করেছেন, আফগানিস্তানে স্বল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি “অত্যন্ত স্থিতিশীল”। মামুনুল হকের ভাষায়, “৫০ লাখ মানুষের হাতে অস্ত্র থাকলেও চার বছরে কোনো ছিনতাই বা রক্তপাতের ঘটনা নেই।”
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি তাঁদের জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ইতিমধ্যে ৪১টি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে, তবে এখনো বাংলাদেশে কোনো কূটনৈতিক প্রতিনিধি পাঠানো যায়নি। এই বিষয়ে তাঁরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী।
তবে সফরে নারীশিক্ষা নিয়ে সীমাবদ্ধতা তাঁদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়েছে। মামুনুল হক বলেন, “আমরা একাধিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, নারীদের জন্য পৃথক শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা হচ্ছে এবং শিগগিরই ইতিবাচক খবর আসবে।”
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। আফগান কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং মনে করছেন, এতে অন্যায়-অবিচারের অবসান ঘটেছে।
আলেমরা জানান, এ সফর আইনগতভাবে বৈধ ছিল এবং এর জন্য সরকারের আলাদা অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। তাঁরা সৌদি আরব থেকে দুবাই হয়ে কাবুলে গিয়েছিলেন এবং বিশেষ ভিসার ব্যবস্থা থাকায় কোনো ইমিগ্রেশন জটিলতায় পড়তে হয়নি।