Tuesday, October 14, 2025

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের পরই বেইজিংমুখী কূটনীতি, মোদির প্রতিশ্রুতি চীনের প্রতি


ছবিঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৩০ আগস্ট ২০২৫-এ চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে পৌঁছেছেন (সংগৃহীতঃ হ্যান্ডআউট/ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো মারফত রয়টার্স)

PNN আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। রবিবার তিয়ানজিনে শুরু হওয়া সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

মোদি বলেন, “পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে ভারত-চীন সম্পর্ককে আমরা এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি আরও জানান, দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় বর্তমানে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতার’ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সাত বছর পর মোদি প্রথমবার চীন সফরে গেছেন। এই সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একে ‘গ্লোবাল সাউথ সংহতির’ প্রদর্শনী হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

শি জিনপিং বৈঠকে সীমান্ত বিরোধ নিরসনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, সীমান্ত ইস্যুকে সামগ্রিক চীন-ভারত সম্পর্ক নির্ধারণ করতে দেওয়া উচিত নয়। বরং দুই দেশের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পারস্পরিক সুযোগ সৃষ্টি।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পরপরই মোদির এমন অবস্থানকে পর্যবেক্ষকরা ‘বেইজিংমুখী’ কূটনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদক ক্যাটরিনা ইউ জানান, মোদি হিসাব কষে বুঝেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের একক নির্ভরতা থেকে সরে এসে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোই এখন তার জন্য কার্যকর হবে।

ভারত ও চীনের সম্পর্ক ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর তলানিতে ঠেকেছিল। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তি, পর্যটন ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং তীর্থযাত্রার অনুমতি দেওয়াসহ একাধিক ইতিবাচক পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন গতি দিয়েছে। এ ছাড়া চীন ভারতকে বিরল খনিজ, সার ও টানেল বোরিং মেশিন রপ্তানির ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং সম্প্রতি এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বেইজিং এ বিষয়ে নয়াদিল্লির পাশে দৃঢ়ভাবে থাকবে।

এসসিও বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী বহুপাক্ষিক জোট হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনে রয়েছে চীন, ভারত, রাশিয়া, পাকিস্তান, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও বেলারুশ। এ ছাড়া আরও ১৬টি দেশ পর্যবেক্ষক বা সংলাপ সহযোগী হিসেবে যুক্ত। সংগঠনটির সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্বের প্রায় ৪২ শতাংশ জনসংখ্যা এবং প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভৌগোলিক এলাকা নিয়ে গঠিত।

বিশ্লেষকদের মতে, শি-মোদির বৈঠক কেবল দুই দেশের জন্য নয়, বরং গোটা অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যেও নতুন বার্তা দিচ্ছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন