- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যার ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ২০ শতাংশের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ইকোনমিক টাইমসের খবর অনুযায়ী, এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের তুলনায় ভারতকে একটি সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে।
এই আলোচনাগুলো গোপনীয় রাখা হয়েছে। ভারত আশা করছে, ট্রাম্পের পূর্ববর্তী পদক্ষেপের মতো তাদের শুল্ক হার প্রকাশ্যে ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা না করে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।
চুক্তির সম্ভাব্য সুবিধা
এই অন্তর্বর্তী চুক্তি উভয় দেশকে চলমান আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবে এবং একটি বৃহত্তর চুক্তিতে পৌঁছানোর আগে ভারত অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য সময় পাবে। এর আগে ট্রাম্প ভারতের জন্য ২৬ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছিলেন। নতুন চুক্তিতে তা ২০ শতাংশের নিচে নামলে তা ভারতের কূটনীতিকদের একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
যদি এই অন্তর্বর্তী চুক্তি সম্পন্ন হয়, তাহলে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি করতে পারা হাতে গোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে ভারতও থাকবে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডার মতো কিছু দেশের ওপর ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা
সংবাদে আরও বলা হয়েছে যে, ভারতের চুক্তির শর্তগুলো ভিয়েতনামের চেয়েও ভালো হবে, কারণ ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এবং তারা তা কমানোর চেষ্টা করছে। ট্রাম্প কেবল যুক্তরাজ্যের সঙ্গেই একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য চুক্তি করেছেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন:
লাওস: ৪০ শতাংশ
মিয়ানমার: ৪০ শতাংশ
কম্বোডিয়া: ৩৬ শতাংশ
থাইল্যান্ড: ৩৬ শতাংশ
বাংলাদেশ: ৩৫ শতাংশ
ইন্দোনেশিয়া: ৩২ শতাংশ
দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও মালয়েশিয়া: ২৫ শতাংশ
অমীমাংসিত বিষয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
চলতি বছরের শুরু থেকেই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় সক্রিয়। যদিও সম্প্রতি দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ট্রাম্প ভারতের ব্রিকস জোটে অংশগ্রহণের কারণে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন। তবে আলোচনা এগিয়ে নিতে শিগগিরই ভারতীয় প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটন সফর করতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে উভয় পক্ষ এখনো অনড়। এর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্রের দাবি যে, ভারত যেন জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জিএম) ফসলের বাজার উন্মুক্ত করে, যা ভারত তার কৃষকদের স্বার্থ এবং খাদ্য নিরাপত্তার কারণে প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কৃষি বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে, কারণ বর্তমানে দুই দেশের কৃষিপণ্যের বাণিজ্য মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলারের। যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারত তাদের ভুট্টা, সয়াবিন ও তুলা কিনুক, যা ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও, কৃষি খাতে অশুল্ক বাধা এবং ওষুধ শিল্পে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া নিয়েও দুই পক্ষ সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে বর্তমান ১৯১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায়।