- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে। এর অংশ হিসেবে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি ড্রোন দিয়ে ভোটকেন্দ্র নজরদারির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
ইসির নির্বাচনি ব্যবস্থাপনা শাখা কর্তৃক প্রণীত খসড়া প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, এ নির্বাচনকে সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে সশস্ত্র বাহিনী (সেনা, নৌ ও বিমান) রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকৌশল নির্ধারণে তফসিল ঘোষণার আগেই একটি পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হবে।
প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, এবারের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫২ জন। ফলে তিন হাজার নতুন ভোটকেন্দ্র যুক্ত করে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়াবে ৪৫ হাজার ৯৮টি।
ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ড্রোন ও সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারির সুপারিশ করা হয়েছে। ইসির নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ ছাড়া অননুমোদিত ড্রোন চলাচল নিষিদ্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। আচরণবিধি ভঙ্গের প্রমাণ হিসেবে গোপনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সংরক্ষণের কথাও বলা হয়েছে।
ভিজিল্যান্স ও অবজারভার টিমের মাধ্যমে আচরণবিধি ভঙ্গের তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার আগে-পরে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরবর্তী সময়েও সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সক্রিয়ভাবে মাঠে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ভোটের পর তিনদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং দুইদিন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সেনা ও গোয়েন্দা বিভাগসহ বিভিন্ন বাহিনীকে নিয়ে সমন্বয় সভার কথা বলা হয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর স্থানীয় প্রশাসন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়েও আলোচনা সভার সুপারিশ রয়েছে।
প্রস্তাবে প্রযুক্তিগত ত্রুটি, দুর্বল নেটওয়ার্ক ও সাইবার হামলার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এতে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ব্যাহত হতে পারে। একইসঙ্গে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সহিংসতা ছড়ানোর আশঙ্কাও উত্থাপন করা হয়েছে।
ভোটের আগের দিন থেকে মনিটরিং সেল ৭২ ঘণ্টা কাজ করবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন করে নিরাপত্তা কর্মী এবং সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে নিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে।
খসড়া প্রস্তাবনার আলোকে শিগগিরই আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নির্বাচনের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ছক চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা প্রস্তাবনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ‘আমার দেশ’-এর কাছে প্রস্তাবনার কপি সংরক্ষিত রয়েছে।