Tuesday, October 14, 2025

ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফরে ‘টেক প্রসপারিটি ডিল’, তবু বাণিজ্য ও কূটনীতিতে খালি হাত ব্রিটেন


ছবিঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীের সরকারি গ্রামীণ বাসভবন চেকার্সে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করেন। (সংগৃহীত। সিএনএন। অ্যান্ড্রু ক্যাবালেরো-রেইনল্ডস/এএফপি/গেটি ইমেজেস )

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN 

যুক্তরাজ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর ঘিরে চরম সতর্কতা অবলম্বন করেছে কেয়ার স্টারমারের সরকার। অপ্রীতিকর কিছু এড়াতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টকে জনগণ ও আন্দোলনকারীদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে। এমনকি এপস্টিন ইস্যুতেও সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে সরকার।

দুই দিনের এ সফরে সবচেয়ে বড় ঘোষণা আসে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে। £১৫০ বিলিয়ন মূল্যের তথাকথিত “টেক প্রসপারিটি ডিল”-এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ব্রিটেনে বিনিয়োগ করবে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে £৩১ বিলিয়ন আসবে এআই ও প্রযুক্তি অবকাঠামোতে, আর প্রায় £৯০ বিলিয়ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রাইভেট ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন। সরকার দাবি করছে, এসব বিনিয়োগে ৭,৬০০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘোষিত বিনিয়োগের বড় অংশ আগেই বাণিজ্যিকভাবে চূড়ান্ত হয়েছিল, যা সফরের সঙ্গে মিলিয়ে একত্রে উপস্থাপন করা হয়েছে। চ্যাথাম হাউসের গবেষক ওলিভিয়া ও’সুলিভানের মতে, “বাস্তব সুফল আসতে অনেক সময় লাগবে, আর জনগণ এখনই ফল চায়।” সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ একে “সিলিকন ভ্যালির ছেঁড়া টুকরো” বলেও আখ্যা দেন।

বাণিজ্যে কিছুটা অগ্রগতি হলেও বড় প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ট্রাম্প ব্রিটিশ পণ্যে ১০% শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে কম হলেও এখনো যথেষ্ট বেশি। ব্রিটেন আশা করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল আমদানিতে আরোপিত ২৫% শুল্ক তুলে নেওয়া হবে, কিন্তু সেটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছে। ফলে সংকটে থাকা ব্রিটিশ ইস্পাত শিল্প আরও কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছে।

কূটনীতিতে বড় কোনো বিরোধ এড়ালেও ব্রিটেন নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারেনি। ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সমালোচনা করলেও রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে অনিচ্ছুক ছিলেন। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্রিটেনের পরিকল্পনা নিয়েও প্রকাশ্যে তেমন বিরোধিতা করেননি তিনি।

এদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ট্রাম্পের প্রভাব ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। নিগেল ফারাজ নেতৃত্বাধীন রিফর্ম ইউকে দল ট্রাম্পের ভাষা ধার করে “মেক ব্রিটেন গ্রেট এগেইন” স্লোগান তুলছে এবং জনমত জরিপে লেবার পার্টির চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের পরামর্শ ডানপন্থী বিরোধীদের আরও সাহস জোগাতে পারে।

সব মিলিয়ে, সফর শেষে স্টারমারের সরকার হয়তো স্বস্তি পাচ্ছে যে বড় কোনো কেলেঙ্কারি ঘটেনি। তবে বাস্তবিক অর্থে অর্থনীতি ও কূটনীতিতে প্রত্যাশিত সাফল্য ব্রিটেনের হাতে আসেনি।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন