Tuesday, October 14, 2025

তিনবার ব্যর্থতার পর সফলতার মুখ দেখল স্পেসএক্সের স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উড়ান


ছবিঃ স্পেসএক্সের স্টারশিপ মেগারকেট ২০২৫ সালের ২৬ আগস্ট টেক্সাসের স্টারবেস থেকে উড়াল দেয়। সাউথ পাদ্রে আইল্যান্ড থেকে দেখা এ ছিল রকেটটির দশম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। টানা কয়েকটি বিস্ফোরণজনিত ব্যর্থতার পর এই উৎক্ষেপণ ইলন মাস্কের মঙ্গলগ্রহে উপনিবেশ স্থাপনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ দূর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে (সংগৃহীত । সিবিএস নিউজ)

দুই দিন দেরিতে হলেও অবশেষে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) টেক্সাসের স্টারবেস ঘাঁটি থেকে মহাকাশে উড়ল স্পেসএক্সের বিশাল রকেট সুপার হেভি–স্টারশিপ। তিনটি টানা ব্যর্থ পরীক্ষার পর এই উড্ডয়নকে সফল মনে করা হচ্ছে, যা কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের জন্য বড় স্বস্তির খবর।

স্টারশিপের উপরের ধাপ পুনঃপ্রবেশের সময় প্রবল তাপে একটি নিয়ন্ত্রণ ফ্ল্যাপ আংশিক গলে যায় এবং ইঞ্জিন কক্ষের চারপাশের সুরক্ষামূলক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবু রকেটটি নিয়ন্ত্রণে থেকে পরিকল্পনামতো ভারত মহাসাগরে পানিতে পতিত হয়। স্পেসএক্স এক্স (পূর্বের টুইটার)–এ পোস্ট করে জানায়, “স্প্ল্যাশডাউন নিশ্চিত! টেস্ট ফ্লাইটের সফল দশম যাত্রার জন্য গোটা টিমকে অভিনন্দন।”

এর আগে প্রথম ধাপ সুপার হেভি বুস্টার ৩৩টি র‌্যাপ্টর ইঞ্জিনের গর্জনে রকেটটিকে মহাকাশপথে ঠেলে দেয় এবং পরবর্তীতে নিজে ভেসে গিয়ে মেক্সিকো উপসাগরে পতিত হয়। এক ইঞ্জিন ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করেও পরিকল্পনামতো তা পরীক্ষাটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।

এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এ পরীক্ষামূলক মিশনে কর্মীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছে। টানা তিন ব্যর্থ পরীক্ষার পর এই সফলতা স্পেসএক্সের ভবিষ্যৎ প্রকল্পে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।

মঙ্গলবারের উড্ডয়নের সময় ৪০ তলা সমান উঁচু এই রকেট প্রায় ১৬ মিলিয়ন পাউন্ড থ্রাস্ট সৃষ্টি করে আকাশে উঠে যায়, যা নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির জন্য তৈরি SLS রকেটের ক্ষমতার দ্বিগুণ।

পরীক্ষার অংশ হিসেবে স্টারশিপ থেকে আটটি কৃত্রিম স্যাটেলাইট মডিউল ছাড়াও সফলভাবে মহাকাশে ইঞ্জিন পুনরায় চালু করা হয়। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের সময় চরম তাপে রকেটের শরীরে ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেলেও নিয়ন্ত্রণ হারায়নি।

স্পেসএক্সের লক্ষ্য ভবিষ্যতে এই স্টারশিপ দিয়েই কেবল স্যাটেলাইট পাঠানো নয়, চাঁদে মানুষ অবতরণ এবং শেষ পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহে উপনিবেশ গড়ে তোলা। তবে এই বিশাল কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে এখনও অনেক প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে—বিশেষ করে জ্বালানি পুনঃভর্তি, দীর্ঘমেয়াদি কক্ষপথে টিকে থাকা এবং নিরাপদ অবতরণের মতো বিষয়গুলো।

নাসাও স্টারশিপের একটি সংস্করণ ব্যবহার করে ২০২৭ সালে দুই নভোচারীকে চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এত অল্প সময়ে সব বাধা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে।

তবু মঙ্গলবারের এই উড্ডয়ন স্পষ্ট করেছে—প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা থাকলেও স্পেসএক্স ধীরে ধীরে তাদের লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন