- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
বাংলাদেশে সংসদীয় কাঠামো ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের সংস্কারের পক্ষে বিপুল জনগণ মত দিয়েছেন—এমন তথ্য উঠে এসেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সাম্প্রতিক জনমত যাচাই জরিপে। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ৪০টি প্রশ্নের মাধ্যমে ১,৩৭৩ জন নাগরিকের মতামত এবং ১৫টি নাগরিক সংলাপের ভিত্তিতে এই জরিপ সম্পন্ন হয়।
মূল ফলাফল
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের সীমা নির্ধারণের পক্ষে ৮৯% উত্তরদাতা।
উচ্চকক্ষে আসন বণ্টনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতি চান ৭১%।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের পক্ষে ৬৯%।
একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদনেতা না হওয়ার প্রস্তাবে একমত ৮৭%।
নির্বাচনকালীন কার্যক্রমে নির্বাহী বিভাগের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবে ৮৭%।
নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফলের সুষ্ঠুতা সার্টিফাই করে প্রকাশের পক্ষে ৮৬%।
নির্বাচনী ব্যয়ে অসত্য তথ্য দিলে প্রার্থিতা বাতিলের পক্ষে ৮৮%।
দুর্নীতিগ্রস্ত, সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্তদের দলীয় সদস্যপদ অযোগ্য ঘোষণায় সমর্থন ৯২%।
দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার (১২০ দিন মেয়াদি) গঠনে সমর্থন ৮৩%।
দুদক, মানবাধিকার কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার পক্ষে ৯০%।
স্থায়ী স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে সমর্থন ৯০%।
সুজনের অবস্থান
ফলাফল উপস্থাপন করেন সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন। সংগঠনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “এই জরিপ প্রমাণ করে—জনগণ সংস্কার চায়, তারা পরিবর্তন চায়। বিদ্যমান কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলো এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতার অতিরিক্ত কেন্দ্রীকরণ ঘটিয়েছে। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে এসব ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসসহ অন্যান্য বক্তারা গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানান।