Tuesday, October 14, 2025

শিক্ষার্থীদের সব দাবি যৌক্তিক বলে মেনে নিল অন্তর্বর্তী সরকার, উপদেষ্টাদের আশ্বাসেও বিক্ষোভ অব্যাহত


ছবিঃ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পুলিশের অবস্থান (সংগৃহীতঃ প্রথম আলো)

ঢাকা, ২২ জুলাই:
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ২৭ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু ও অন্তত ৭৮ জনের আহত হওয়ার খবরে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলেজ ক্যাম্পাসে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস উইংয়ের বিবৃতি: শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবিই যৌক্তিক

দুপুরে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে, তার প্রতিটিই যৌক্তিক এবং সরকার সেগুলোর প্রতি পূর্ণ সংবেদনশীল।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, “মাইলস্টোন স্কুলে একটি তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে নিহত, আহত এবং নিখোঁজদের তথ্য হালনাগাদ করে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং ট্রমা ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের ভিড় নিয়ন্ত্রণের সময় সেনাসদস্যদের কিছু অনভিপ্রেত আচরণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হবে।”

আইন উপদেষ্টা আশ্বাস দেন, জনবহুল এলাকায় আর প্রশিক্ষণ বিমান চালানো হবে না। এই বিষয়ে বিমানবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক আবরার জানান, আগামী ২৪ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।

উপদেষ্টাদের আশ্বাসেও বিক্ষোভ অব্যাহত

উপদেষ্টারা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। তাঁরা আবারও উপদেষ্টাদের ঘিরে ধরেন এবং ক্যাম্পাসেই বিক্ষোভ চালিয়ে যান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কলেজের ৫ নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের বোতল ছুঁড়ে মারতে এবং পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতেও দেখা যায়।

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজসহ আশপাশের আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এই বিক্ষোভে যোগ দেয়।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি

  1. নিহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ নাম ও পরিচয় প্রকাশ

  2. আহতদের নির্ভুল তালিকা প্রকাশ

  3. প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ

  4. ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল

  5. বিমান প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মানবিক সংস্কার

  6. শিক্ষকদের ওপর সেনাসদস্যদের হামলার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা

নিহত ও আহতের হালনাগাদ তথ্য

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। রাজধানীর চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৮ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন