- ২১ অক্টোবর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক | সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় পরপর তিন কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের পাঁচ দিনের নবজাতক কন্যাকে খালে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। পুলিশ সোমবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত নারী শারমিন আক্তার (৩২) কলারোয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের (৪২) স্ত্রী।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে শিশুটির বাবা ইব্রাহিম খলিল থানায় এসে তাঁর নবজাতক কন্যা নিখোঁজের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চান। কিন্তু তাঁর কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শারমিন আক্তার স্বীকার করেন, পরপর দুই কন্যা সন্তান জন্মের পর আবারও কন্যা সন্তান হওয়ায় মানসিক চাপে তিনি নবজাতককে খালের পানিতে ফেলে দেন। পরে তাঁর দেখানো স্থানে বাড়ির পাশের একটি সরকারি খালের কচুরিপানার নিচ থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, শিশুটির দাদী খাদিজা খাতুন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত শারমিন আক্তারকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। নবজাতকের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনসুর আলী বলেন, “সন্ধ্যা থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না, তবে মা-বাবার আচরণ ছিল অস্বাভাবিক। পরে পুলিশ আসার পরই বিষয়টি প্রকাশ পায়।”
ঘটনাস্থলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিঠুন সরকার, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও পিবিআই কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি একটি ‘চরম সামাজিক ট্র্যাজেডি’, এবং এর পেছনে পারিবারিক ও মানসিক চাপের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।