- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢাকাই চলচ্চিত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন সালমান শাহ। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হন শাবনূর। মাত্র চার বছরের মধ্যে তারা একসঙ্গে ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বাংলা সিনেমার ইতিহাসে স্থায়ী ছাপ রেখে যান। সময় গেলেও এই জুটির জনপ্রিয়তা আজও অমলিন।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত শাবনূর সালমান শাহকে নিয়ে মনের কথা খুলে বলেন। তিনি বলেন, “সালমান শাহ আমাকে ছোট বোনের মতোই দেখতেন। আমাকে ‘পিচ্চি’ বলে ডাকতেন। তাঁর মা-বাবাও আমাকে মেয়ের মতোই আদর করতেন।”
শাবনূর জানালেন, “আমিও সালমানকে ভাইয়ের মতোই দেখতাম। আমাদের মধ্যে ছিল দারুণ বন্ধুত্ব। সালমান নাচে একটু দুর্বল ছিলেন, প্রায়ই বলতেন, ‘আমাকে একটু নাচ দেখিয়ে দে।’ আমি হাসি-খুশি তা দেখিয়ে দিতাম।”
সালমান শাহর সহকারী মুনসুর আলীও বলেন, “সালমান ভাই সব নায়িকাকেই সম্মান করতেন। শাবনূরকে তিনি ছোট বোনের মতোই দেখতেন।”
শাবনূর স্মৃতিচারণায় বলেন, “সালমানের মৃত্যু আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল। হঠাৎ খবর পেলাম, তিনি আর নেই। বিশ্বাসই করতে পারিনি। পরে নিশ্চিত হয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যদি সালমান বেঁচে থাকতেন, বাংলা চলচ্চিত্রের চেহারাটা হয়তো ভিন্ন হতো। আমাদের জুটি হয়তো উত্তম কুমার–সুচিত্রা সেনের মতো কিংবদন্তি হয়ে যেত।”
শাবনূর স্পষ্ট করেন, সালমানের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক কখনো প্রেমের নয়, বরং ভাইবোনের মতো ছিল। তিনি বলেন, “কিছু মানুষ আমাদের সম্পর্ক নিয়ে গল্প বানিয়েছে, কেউ কেউ তা দিয়ে ব্যবসা করেছে। এতে কষ্ট পেয়েছি, কারণ আমি আমার ক্যারিয়ার অনেক কষ্টে গড়েছি।”
সালমান-শাবনূরের একসঙ্গে অভিনীত ছবির সংখ্যা ১৪টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো: ‘তুমি আমার’, ‘বিক্ষোভ’, ‘সুজন সখি’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘বিচার হবে’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘জীবন সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’ এবং ‘বুকের ভেতর আগুন’।
সালমান শাহ আর নেই, কিন্তু তাঁর স্মৃতি ও উপস্থিতি আজও বাংলা চলচ্চিত্রের পর্দায় জীবন্ত। শাবনূরের বিশ্বাস, সময় যতই যায়, তাদের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হবে—বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে প্রিয় ও জনপ্রিয় জুটি হিসেবে।