- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সাবেক আইন কমিশনের চেয়ারম্যান খায়রুল হক নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও জালিয়াতির অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তাঁর দেওয়া ঐতিহাসিক কিছু রায়, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি পরিকল্পিতভাবে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রবিরোধী ও জালিয়াতির শামিল। মামলাটি করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল বারী ভূঁইয়া। মামলাটি গত বছরের ২৫ আগস্ট দায়ের করা হয়। এছাড়া ঢাকাতেও তাঁর বিরুদ্ধে অনুরূপ অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁর দায়িত্ব কার্যকর হয়। অবসরে যান ২০১১ সালের ১৭ মে। বিচারপতির দায়িত্ব পালনকালে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন। এর মধ্যে রয়েছে সংবিধানের পঞ্চম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়, ফতোয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা, ঢাকার চার নদী রক্ষা এবং স্বাধীনতার ঘোষক ইস্যুতে রায়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাঁকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মেয়াদ শেষ হলেও কয়েক দফা তাঁকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি এ পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় তাঁকে রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত করে তোলে। বিএনপি এই রায়কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ করে আসছে। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব মামলা চলছে, তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপ ও প্রতিবাদের ধারাবাহিক পরিণতি বলেই মনে করছেন অনেকে।
এ বিষয়ে খায়রুল হকের কোনও বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। মামলাগুলোর তদন্ত চলছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।