- ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
দক্ষিণি সিনেমা জগতের অন্যতম জনপ্রিয় নাম হিসেবে উঠে এসেছে প্রদীপ রঙ্গনাথন। মাত্র দুটি সিনেমা দিয়েই তিনি নিজেকে তারকাদের কাতারে জায়গা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেন, “আপনি হিরো দেখতে প্রথাগত নায়কদের মতো নন, তবে দুই সিনেমায় এত জনপ্রিয়তা অর্জন কিভাবে সম্ভব?” এই প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে প্রদীপের খ্যাতির রহস্য।
আজকের সিনেমার বাজারে যেখানে বড় তারকার সিনেমাও দর্শকদের মন ছুঁতে পারছে না, সেখানে প্রদীপ রঙ্গনাথনের দ্রুত জনপ্রিয়তা এক বিশেষ কৌশলের ফল। ‘লাভ টুডে’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন। তার সিনেমা শুধু কেবল হাস্যরস বা রোমান্স নয়, বরং আধুনিক যুবক প্রজন্মের সম্পর্কের উদ্বেগ, বিশ্বাস, সততা ও গোপনীয়তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। সিনেমাটির মাধ্যমে প্রদীপ তরুণদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন এবং তারপর পুরো পরিবারের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন।
প্রদীপ রঙ্গনাথনের সাফল্যের মূল কারণ তার গল্প বলার ধরন। আজকের তরুণরা এমন গল্প খুঁজে বেড়ায় যা তাদের জীবনের সঙ্গে মেলে। এর আগে অনেক অভিনেতা যুবকদের মন জয় করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, সুরিয়া, বিজয়, মহেশ বাবু, পবন কল্যাণ, প্রভাস এবং বিজয় দেবেরকোন্ডা। এরা সবাই প্রথমে তরুণদের কাছ থেকে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন এবং পরে অন্যান্য বয়সী দর্শকের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন।
প্রদীপও সেই একই কৌশল প্রয়োগ করেছেন। 'লাভ টুডে' সিনেমার মাধ্যমে তিনি সেই তরুণদের গল্প বলেছেন, যারা সম্পর্কের মধ্যে নিজেদের ভীষণ সতর্ক ও অস্বস্তি অনুভব করে। এই ধরনের বিষয় যুবকরা সহজেই নিজের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে। সিনেমাটি যখন কলেজ শিক্ষার্থী ও তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে, তখন তা পরবর্তীতে পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছেও সমাদৃত হয়।
প্রদীপ রঙ্গনাথন শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি একজন দক্ষ পরিচালকও। 'লাভ টুডে' সিনেমায় তারুণ্যের উচ্ছ্বাস এবং সচেতনতার চমৎকার প্রতিফলন দেখা যায়। ছবির গানগুলো কেবল গানই নয়, তা মেজাজ, অনুভূতি এবং জীবনধারার এক অনন্য প্রকাশ। 'ড্রাগন' সিনেমায়, যদিও তিনি পরিচালনা করেননি, তবে চরিত্রায়ণে তার প্রভাব স্পষ্ট।
প্রদীপের আসল শক্তি তার বাস্তবধর্মী নির্মাণ শৈলী। তিনি সিনেমায় কেবল গল্প বলেন না, বাস্তবতা তুলে ধরেন। তিনি কখনোই হিরো হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান না, বরং বাস্তব মানুষ হিসেবে তার চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন। এই সততার সঙ্গে গল্প বলার শৈলী তার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
আজকের সিনেমা শুধু গল্প নয়, একটি পুরো প্যাকেজ হিসেবে দর্শকদের কাছে পৌঁছায়। প্রদীপ এই ধারণা ভালভাবেই জানেন। তিনি কখনোই টিপিক্যাল হিরো হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেননি। তার সিনেমায় তিনি সাধারণ মানুষের গল্প শোনান, যাদের সঙ্গে দর্শক সহজেই সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে।
প্রদীপ রঙ্গনাথন এখন জনপ্রিয়তার শিখরে উঠলেও সিনেমা জগৎ কখনোই সহজ নয়। একটি ভুল সিদ্ধান্তই সবকিছু বদলে দিতে পারে। তবে প্রদীপ জানেন, তার সাফল্যের মূল কারণ হল সততার সঙ্গে গল্প বলা। ভবিষ্যতেও তিনি এই নীতি ধরে রাখতে চান।
সামনে হয়তো আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, কিন্তু প্রদীপ তার শক্তিশালী ও বাস্তবধর্মী গল্প বলার ধারা ধরে রেখে তার অবস্থান বজায় রাখতে চান।