- ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এ দুটি বিষয়ে সংবিধান সংশোধন করে নতুন বিধান যুক্ত করা হবে। গতকাল রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
জরুরি অবস্থা জারির নতুন বিধান অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করবেন। মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা তার অনুপস্থিতিতে উপনেতা অংশ নিতে পারবেন। বিদ্যমান সংবিধানে ব্যবহৃত ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দের পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতার প্রতি হুমকি বা মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ শব্দগুলো ব্যবহার করা হবে। জরুরি অবস্থার মধ্যেও কিছু মৌলিক অধিকার যেমন জীবনের অধিকার এবং বিচার ও দণ্ড সংক্রান্ত ৩৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অধিকারগুলো স্থগিত করা যাবে না।
অন্যদিকে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন। তবে কোনো দল যদি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে যে তারা জ্যেষ্ঠতম দুজনের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেবে, তবে তারা ক্ষমতায় গেলে সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করতে পারবে। কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান থাকলে তাঁকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
গতকাল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও একটি নতুন প্রস্তাব পেশ করেন, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচটি বিকল্প রাখা হয়েছে।
বিএনপির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের চেষ্টা করবেন। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে বিকল্প হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। শেষ পর্যন্ত এই পদ্ধতিতেও ঐকমত্য না হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে।
এসব প্রস্তাব নিয়ে গতকাল বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল বিএনপির প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বলেছে, এতে ত্রুটি রয়েছে। অন্য কোনো দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে প্রস্তাব থাকলে তা আজ সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে কমিশনকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।