- ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
PNN নিউজ ডেস্ক। কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জ-১ (সদর–হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর–নিকলী) আসনে অবশেষে বিএনপি চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর দীর্ঘদিনের অপেক্ষা, প্রতিযোগিতা ও উত্তেজনার অবসান হয়েছে ডজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী ও তাঁদের সমর্থকদের।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। এই আসনে বেশ কয়েকজন শক্তিশালী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্যসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতারা মনোনয়ন পেতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যান।
মনোনয়ন পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, “দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটি মর্যাদার সঙ্গে পালন করব।” তবে নির্বাচনী মাঠে থাকা কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছেন। তাঁদের মতে, দলের সংকটময় সময়ের অবদান মূল্যায়িত হয়নি।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মজিবুর রহমান।
দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় ছিল, এই আসনটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১২–দলীয় জোটের সহযোগী দল বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাকে দেওয়া হতে পারে। গত বছরের ২২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে স্থানীয় নেতাদের পাঠানো একটি চিঠি সেই গুঞ্জনকে আরও জোরদার করে।
এদিকে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শেখ মজিবুর রহমানের সমর্থকেরা প্রায় প্রতিদিনই শোডাউন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। ট্রেন অবরোধ থেকে শুরু করে বাজিতপুর–নিকলীর ২০ কিলোমিটার এলাকায় একই দিনে ২৩টি স্থানে মানববন্ধনের ঘটনাও ঘটেছে।
অন্যদিকে এহসানুল হুদার সমর্থকেরাও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে। মোটরসাইকেল ভাঙচুর, পিকআপ ক্ষতিগ্রস্তসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করে।
শেষ পর্যন্ত শেখ মজিবুর রহমান ধানের শীষ প্রতীকের টিকিট পান। তিনি বলেন, “দল আমাকে আস্থা করেছে, আমিও দলকে নিরাশ করব না।” এহসানুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর দুই আসনেই বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকেরা আনন্দমিছিল বের করেন। তবে মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের অনেকেই প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানাচ্ছেন। তাঁদের মতে, মাঠে সক্রিয় থেকে ত্যাগ স্বীকার করা নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ১৯৯১ সালে বিএনপি বিজয়ী হলেও এরপর দীর্ঘসময় আওয়ামী লীগের দখলে ছিল আসনটি। কিশোরগঞ্জ-৫ আসনেও জোটগত সমীকরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের রাজনীতিতে এই দুটি আসনের প্রার্থী ঘোষণা বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে বলে মনে করছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষকেরা। নির্বাচনী মাঠ এখন আরও সরব হয়ে উঠবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।