Tuesday, October 21, 2025

কানাডায় আবারও গুলির ঘটনা, কপিল শর্মার রেস্তোরাঁ ‘ক্যাপস ক্যাফে’ টার্গেট লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের


ছবিঃ কপিল শর্মার রেস্তোরাঁয় পরপর তিনবার হামলার ঘটনা, ‘সালমানের ঘনিষ্ঠ বলেই কি কপিল শর্মা এখন বিষ্ণোই গ্যাংয়ের নিশানায় (সংগৃহীত)

স্টাফ রিপোর্টার | PNN: 

ভারতের জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী ও অভিনেতা কপিল শর্মার কানাডার রেস্তোরাঁ আবারও গুলির ঘটনার শিকার হয়েছে। গত চার মাসে এটি তৃতীয়বারের মতো সশস্ত্র হামলার শিকার হলো কপিলের মালিকানাধীন ‘ক্যাপস ক্যাফে’। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে, কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারে শহরে।

স্থানীয় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রাতের নীরবতা ভেঙে অন্তত তিন রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় রেস্তোরাঁর বাইরে। সৌভাগ্যবশত কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মুখোশধারী ব্যক্তি ক্যাফের সামনে দাঁড়িয়ে টানা গুলি ছুড়ছেন।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ভারতের কুখ্যাত অপরাধী লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং। গোল্ডি ধিলন ও কুলবীর সিধু নামের দুই ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে হামলার দায় স্বীকার করেন। সেখানে লেখা হয়, “আমরা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করি না। কিন্তু যারা আমাদের পথে বাধা দেয় বা কথা রাখে না, তারা সাবধান থাকুক। ধর্মবিরোধী মন্তব্য করলেও কেউ রেহাই পাবে না—বুলেট যে দিক থেকে আসবে, তা আগে জানা যাবে না।”

এর আগে চলতি বছরের আগস্টে একই রেস্তোরাঁয় একবারে ২৫টি গুলি চালানো হয়েছিল। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে কপিল শর্মা একাধিকবার হুমকি ফোন পান। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁর কাছ থেকে এক কোটি রুপি চাঁদা দাবি করে, না দিলে ‘পরিণতি ভয়াবহ হবে’ বলে সতর্ক করে। ওই ঘটনার পর কলকাতা থেকে দিলীপ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সহযোগী বলে জানিয়েছিল ভারতীয় পুলিশ।

কপিল শর্মা বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। জানা গেছে, বিষ্ণোই গ্যাং সালমানের বিরোধী হিসেবে বহুদিন ধরে সক্রিয়। ১৯৯৮ সালের কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার মামলার পর থেকেই সালমানকে টার্গেট করছে এই গোষ্ঠী। বিশ্লেষকদের মতে, কপিলের সঙ্গে সালমানের ঘনিষ্ঠতা হয়তো তাঁকেও বিষ্ণোই গ্যাংয়ের নিশানায় এনেছে।

কানাডার সরকার সম্প্রতি লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে। সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোষ্ঠীটি প্রবাসী ভারতীয় সমাজ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি করছে। কানাডার জননিরাপত্তামন্ত্রী গ্যারি আনান্দাসাঙ্গারি বলেন, “বিষ্ণোই গ্যাং প্রভাব বিস্তারের জন্য হুমকি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গুলির ঘটনার পর কানাডার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কপিলের ক্যাফের নিরাপত্তা জোরদার করেছে। পুলিশের বিশেষ টহল, অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও পাহারাদার মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও কপিল শর্মা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি, ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে—এ ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

বর্তমানে কপিলের পরিবার ও তাঁর ম্যানেজমেন্ট টিম কানাডিয়ান আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে, যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

কমেডির জগতে মানুষকে হাসানো যার কাজ, সেই কপিল শর্মা এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়েই শঙ্কিত—এমনটাই বলছে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা।


Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন