- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান সংঘাতে জড়ানোর আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম হঠাৎ করে বড় ধরনের লাফ দিয়েছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আত্মসমর্পণ’ দাবির পর বাজারে তেল সরবরাহ ব্যাঘাতের ভয় গভীরতর হয়ে উঠেছে।মঙ্গলবার ব্রেন্ট এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) অয়েলের দাম যথাক্রমে ৪.৪ শতাংশ ও ৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি দাঁড়ায় $৭৬.৪৫ ও $৭৪.৮৪।
বুধবার ভোরেও বিশ্ববাজারে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল।বিশ্লেষকেরা বলছেন, তেহরানের দক্ষিণ পার্স গ্যাসফিল্ড, ফজর জাম গ্যাস প্লান্ট, শহরান তেল ডিপো এবং শার রে পরিশোধনাগারে ইসরায়েলি হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটেনি, তবে ইরান যদি খার্গ দ্বীপে আঘাত পায় কিংবা যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তখন পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নিতে পারে।মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ফোরডোর দিকে নজর দিচ্ছে হোয়াইট হাউস।
ট্রাম্প প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তারা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি কোথায় আছেন, তা জানেন—তবে ‘এখনই হত্যা নয়’, এমন হুমকি দিয়েছেন তিনি। এর ফলে যুদ্ধের পরিসর বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও এটি অশনিসংকেত। মার্কিন স্টক মার্কেটের প্রধান সূচকগুলোও মঙ্গলবার রাতে পতনের মুখে পড়ে—এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমেছে ০.৮৪ শতাংশ এবং কম্পোজিট ০.৯১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।বিশ্বজুড়ে যেকোনো সরবরাহ সংকটে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির স্থান হলো হরমুজ প্রণালী, যেখান দিয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বৈশ্বিক তেল পরিবহন হয়।
এই প্রণালী বন্ধ হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি সংকট ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।ওয়াশিংটনের বিশ্লেষক টমাস ও’ডনেল বলেন, “ইসরায়েল যদি শুধু পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে ওপেকসহ যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদকরা ইরানের ঘাটতি পূরণে সক্ষম হতে পারে। কিন্তু বৃহত্তর হামলা বা শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা হলে ইরান সৌদি আরবের পরিশোধনাগারে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক তেল সরবরাহে চরম ক্ষতি করতে পারে।বিশ্ব এখন এক অজানা দিকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে একসঙ্গে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, যুদ্ধের বিস্তার ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা শঙ্কা তৈরি করছে।
২০২৫ সালের ১৫ জুন তেহরানের শারান তেল ডিপোতে ইসরায়েলি হামলার পর ঘটনাস্থলে উড়ছে ইরানের পতাকা।[ছবি: মজিদ আসগরিপুর/ওয়েস্ট এশিয়া নিউজ এজেন্সি, রয়টার্সের মাধ্যমে]