Tuesday, October 14, 2025

'গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে': এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম


ছবিঃ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (সংগৃহীত । ইন্টারনেট)

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেছেন যে, গোপালগঞ্জের প্রতিটি ঘরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গতকাল বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা এবং এতে চারজন নিহত হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম তার পোস্টে বলেন, "গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান গতকালের বক্তব্যেই পরিষ্কার বলা হয়েছে। পুরো বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট, গোপালগঞ্জের প্রতিও আমাদের সে কমিটমেন্ট। গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্য আমরা বিরোধিতা করি।"

তিনি অভিযোগ করেন, গোপালগঞ্জ এবং পুরো বাংলাদেশকে "মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত" করা হবে। নাহিদ ইসলামের দাবি, "আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাব।"

গতকালকের হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাই নাই। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের উপরে। যেরকমটা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।"

নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগকে একটি "সন্ত্রাসবাদী সংগঠন" আখ্যা দিয়ে বলেন, "গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরেও ৫ই আগস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।"

তিনি জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি, আর গ্রেপ্তার হলেও তারা জামিন পেয়ে যাচ্ছে বা থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। নাহিদ ইসলাম প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে "ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা"দের উপস্থিতির অভিযোগও তুলেছেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, প্রশাসনের নির্দেশনা এবং সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই তারা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছিলেন এবং পদযাত্রা না করে শুধু পথসভা করেছেন। তা সত্ত্বেও ফেরার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র আক্রমণ চালায়।

চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, "কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।" তিনি সরকার ও প্রশাসনকে এই ঘটনার দায় নিতে হবে উল্লেখ করে সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। তার মতে, শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারা দেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে।

নাহিদ ইসলাম দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, "আমরা কমিটি করেছিলাম, আমরা গোপালগঞ্জে যাব। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দিব না।" তিনি পুনরায় গোপালগঞ্জে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, "আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে।"

তিনি শহীদ বাবু মোল্লা ও শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে পুনরুদ্ধার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং বলেন, "এ মাটি মুজিববাদীদের হতে দিব না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীর হবে না ইনশা আল্লাহ।" গতকালের হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন