Friday, December 5, 2025

গণভোটের তারিখ ঘোষণার দাবি জামায়াতসহ আট দলের


ছবিঃ গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা:

নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের দাবিতে রাজধানীর পল্টনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে আয়োজিত এ সমাবেশে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা করলেও গণভোটের তারিখ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সোজা আঙুলে যদি ঘি না ওঠে, আঙুল বাঁকা করতে হবে।”

সমাবেশে তাহের বলেন, নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পরও আইনি কাঠামোর মধ্যে গণভোট আয়োজন সম্ভব। তিনি আরও বলেন, “গণভোটের বিষয়ে বিলম্ব করলে তা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তখন জনগণ নতুন পথ বেছে নেবে।”

জামায়াত নেতা দাবি করেন, এক দিনে দেশে যত চাঁদাবাজি হয়, সেই টাকায় একটি গণভোট আয়োজন করা সম্ভব। “গণভোটে টাকার অজুহাত দেওয়া অর্থহীন,” বলেন তিনি।

তিনি জানান, জামায়াত রাজনৈতিক সমাধান ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নের জন্য অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। “আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা কমিটি গঠন করেছি। অন্য দলগুলোকেও অনুরোধ করছি যেন তারা আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত হয়,” বলেন তাহের।

তিনি জানান, আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। “তাঁকে আবারও যোগাযোগ করা হবে, যাতে বিএনপি আলোচনায় অংশ নেয়,” বলেন তাহের।

জামায়াতের এই নায়েবে আমির আরও বলেন, “জাতি চায় না আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন দেখতে। এবার এমন নির্বাচন চাই, যেখানে ভোট ডাকাতি বা কেন্দ্র দখল হবে না। দলগুলো টেলিভিশনে প্রকাশ্যে অঙ্গীকার করবে, নির্বাচনে জবরদস্তি হলে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল হবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকেও স্পষ্ট করতে হবে— যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, তবে সেটি বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেওয়া হবে। দেশ আর অন্ধকারে ফিরতে চায় না।”

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, “গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে করা যাবে না। যেদিনই নির্বাচন হোক, তার আগে গণভোট দিতে হবে। প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে গেলেও গণভোট আগে হতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার ও জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।

সমাবেশ শেষে বেলা ১২টার দিকে আট দলের নেতারা “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানি না”, “গণভোটের তারিখ দিতে হবে”সহ নানা স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করেন। মিছিলটি মৎস্য ভবন মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে থামিয়ে দেয়।

পরে আট দলের নয়জন প্রতিনিধি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জমা দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী আন্দোলনের ফজলুল বারী মাসউদ, এবং অন্যান্য শরিক দলের শীর্ষ নেতারা।

দলগুলো জানিয়েছে, সরকার দ্রুত গণভোটের তারিখ ঘোষণা না করলে ১১ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীতে “চলো চলো, ঢাকা চলো” কর্মসূচি পালন করা হবে।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন