- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভিনিউ (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদের ঘোষিত 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচীর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা এই কর্মসূচিকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়া বিশ্বের কোথাও এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার নজির নেই।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা তাদের এই অবস্থান স্পষ্ট করেন। বাংলাদেশ চেম্বার অফ ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) মূল বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এমনিতেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংলাপ স্থবির হয়ে আছে। এর মধ্যে অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত এনবিআরের এই অচলাবস্থা দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। তারা মনে করেন, আন্দোলনরত ঐক্য পরিষদের নেতাদের উচিত সময় নষ্ট না করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিডার মতো সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসা।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি তাদের 'কলম বিরতি' বা 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি প্রত্যাহার করে অবিলম্বে কাজে যোগদানের আহ্বান জানান। তারা জোর দিয়ে বলেন, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন যাতে এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায় এবং একই সাথে দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স (আইসিসি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, "এনবিআরের কর্মকর্তারা হুট করে 'বন্ধ করে দিলাম' বলে দিতে পারেন না। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এনবিআরের কর্মকর্তা, তারা ট্রেড ইউনিয়নের নেতা নন। তারা ট্রেড ইউনিয়নের মতো কর্মসূচি দিয়ে কর্মবিরতি পালন করতে পারেন না।"
তিনি আরও বলেন, "এনবিআরসহ সরকারের কোনো সংস্থাই ট্রেড ইউনিয়ন প্ল্যাটফর্ম না। তাদের আলোচনায় বসার বা অভিমত জানানোর সুযোগ আছে, কিন্তু সেগুলোর ওপর নির্ভর করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। আমাকে জানানো হয়েছে, আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানানোর পরও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।"
মাহবুবুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, "এত লম্বা সময় অর্থনীতির এই লাইফলাইন বন্ধ থাকতে পারে না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমি এনবিআরের সব কর্মকর্তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলতে চাই, এ ধরনের আন্দোলন চলতে পারে না। আমরা বিশ্বাস করি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সংকট নিরসন সম্ভব, যেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে যৌক্তিক সংস্কার করে।