- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক কলমবিরতি এবং ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির 'ফাঁদ' চট্টগ্রাম বন্দরে এক ভয়াবহ অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। এর ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় ৮-১০ হাজার অতিরিক্ত কনটেইনার বন্দরে জমে জট তৈরি হয়েছে। ছুটির পর কনটেইনার ডেলিভারির গতি কিছুটা বাড়লেও, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কাস্টমস কর্মকর্তারা আবারও একই কর্মসূচিতে নামেন। এরপর শনি ও রবিবার তারা 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি পালন করায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন ও ডেলিভারি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।
এই অচলাবস্থার কারণে শনি ও রবিবার, এই দু'দিনে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৭ হাজারেরও বেশি রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ করা যায়নি, যা চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে রপ্তানি না হওয়া কনটেইনারের সর্বোচ্চ সংখ্যা। এতে সেবা প্রত্যাশীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা রপ্তানি পণ্যের জাহাজীকরণে বাধা পাওয়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
শিপিং কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, রপ্তানি পণ্য প্রথমে কারখানা থেকে চট্টগ্রামের ১৯টি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে আনা হয়। সেখানে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর কনটেইনারে পণ্য ভরা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে বুকিং অনুযায়ী পণ্যগুলো বন্দরে এনে জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচির কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার (বিপ্লব) এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, "ডিপোতে প্রতিদিনই রপ্তানি পণ্যের স্তূপ বাড়ছে। কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় শুল্কায়ন কার্যক্রম হচ্ছে না। ফলে কোনো কনটেইনার বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না।"
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রবিবার বন্দর জেটিতে এএস সিসিলিয়া, এক্সপ্রেস নিলওয়ালা ও হং ডা জিন-৬৮ নামের তিনটি জাহাজের রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাস্টমসের কর্মসূচির কারণে শনি ও রবিবার কোনো কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো সম্ভব হয়নি। কর্মসূচির আগে কিছুসংখ্যক কনটেইনার জাহাজে তোলা হলেও, বুকিং অনুযায়ী সব কনটেইনার না আসায় তিনটি জাহাজই বন্দর ছেড়ে যেতে পারেনি।