- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন করে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা রুখে দেওয়া না গেলে দেশের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ফখরুল বলেন, “আজকে একটা নতুন ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশে একধরনের উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই উগ্রবাদকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। অন্যথায় বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষা পাবে না।”
তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলার অভিযোগও করেন। তার বক্তব্য, “১৯৭১ সাল আমাদের স্বাধীন দেশ ও ভূখণ্ড দিয়েছে। ২৪ জুলাই–আগস্টের শহীদরা নতুন গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখিয়েছে। এই দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ’৭১–কে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
ফখরুল সাম্প্রদায়িকতার রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়েও সতর্ক করে বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই দেশটা আমার, আপনার, আমাদের সবার। সংকটের সময় মানুষকে মানুষ হিসেবেই বাঁচাতে হবে। জাতিগত, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হলে স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম সফল হবে।”
ফখরুল ভূষিত করেন, ভগবান কৃষ্ণের জন্ম দুষ্টের দমন ও শিষ্টের রক্ষার জন্য হয়েছিল। যুগে যুগে অন্যায় বেড়ে গেলে ধর্মীয় আবর্তনের মাধ্যমে মানুষকে সঠিক পথে ডাকা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক—হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বিএনপি, আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কেউ। আমরা সবাই বন্ধু।”
তিনি বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ জনগণকে প্রজা হিসেবে দেখেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। “প্রায় ৮৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, দেশের অর্থনীতি কীভাবে টিকে থাকবে?”
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সহসভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।