- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে অনুষ্ঠিতব্য বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান হবে চীনের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনের অন্যতম বড় আয়োজন।
এ আয়োজনকে ঘিরে নজর কাড়ছে তিন শীর্ষ নেতার—চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন—একসঙ্গে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা। এতে বৈশ্বিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন শক্তির ঐক্য প্রদর্শনের বার্তা যাবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ নিশ্চিত করেছে, ২০১৯ সালের পর এবারই প্রথমবারের মতো কিম জং উন চীন সফর করবেন। এর আগে ২০২৩ সালে তিনি রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে দেশ ছাড়েন।
চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হং লেই জানিয়েছেন, মোট ২৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান এই সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ রাশিয়াপন্থী কয়েকজন ইউরোপীয় নেতাও উপস্থিত থাকবেন। তবে পশ্চিমা বিশ্বের কোনো শীর্ষ নেতা আমন্ত্রণে সাড়া দেননি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ সপ্তাহে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মেলনে অংশ নিতে তিয়ানজিনে থাকলেও তিনি কুচকাওয়াজে থাকবেন না বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
৭০ মিনিটের এ অনুষ্ঠানে ১০ হাজারের বেশি সেনা, শতাধিক যুদ্ধবিমান ও উন্নত সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন করা হবে। চীনের সেনাবাহিনী আধুনিকীকরণে শি জিনপিংয়ের প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটবে এই আয়োজনের মাধ্যমে। হাইপারসনিক অস্ত্র, ড্রোন, ইলেকট্রনিক জ্যামিং সিস্টেম এবং উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হবে।
চীন দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রধান সহায়ক শক্তি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনীতিকে নতুনভাবে জটিল করে তুলেছে। গত বছর পিয়ংইয়ংয়ে কিম-পুতিন প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যেখানে যেকোনো এক দেশ আক্রমণের শিকার হলে অপর দেশ তৎক্ষণাৎ সামরিক সহায়তা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হং লেই বলেন, “চীন ও উত্তর কোরিয়ার ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই গড়ে উঠেছে। আমরা সমাজতান্ত্রিক উন্নয়ন, আঞ্চলিক শান্তি ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যেতে চাই।”