- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আগামী আগস্ট মাসেই নতুন ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মানসুর। তিনি বলেন, “লাইসেন্সের সংখ্যা খুব বেশি হবে না, আমরা ধাপে ধাপে এগোব।”
পূর্বে আবেদনকারীরা আবার আবেদন করতে পারবে, এবং আবেদন যাচাইয়ের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে গভর্নর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান।
আগের আবেদনকারীরা পুনরায় আবেদন করতে পারবে
লাইসেন্স সংখ্যা সীমিত, ধাপে ধাপে অনুমোদন
আবেদনকারীদের কমপক্ষে ২,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ সক্ষমতা থাকতে হবে
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি ‘ন্যানো লোন’ দিতে পারবে না
ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ২,০০০ থেকে ৩,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ সক্ষমতা থাকা বাধ্যতামূলক হবে বলে জানান গভর্নর। তিনি বলেন, “ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে লাভজনক হতে সময় লাগে। যেমন বিকাশের ১২ বছর লেগেছে, নগদের ক্ষেত্রেও এক দশক লাগতে পারে।”
ন্যানো লোন বিষয়ে গভর্নর স্পষ্ট করে বলেন, বর্তমানে এমএফএস প্রদানকারীরা সরাসরি এই ঋণ দিতে পারবে না। এর জন্য তাদের আলাদা ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে হবে অথবা পৃথক লাইসেন্স নিতে হবে।
বর্তমানে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারলেও, ভবিষ্যতে তা ১ লাখ, ১.৫ লাখ বা ৫ লাখ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে, যদি তারা পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা ও দক্ষতা প্রমাণ করতে পারে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য নীতিমালা প্রকাশ করে। এরপর ২১ জুন থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ৫২টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৮টি প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয় এবং ২টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য এলওসি পায়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পরবর্তীতে নতুন গভর্নর আহসান এইচ মানসুর দায়িত্ব নিয়ে ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্স প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ পর্যালোচনা ঘোষণা করেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে এলওআই পাওয়া কোরি ডিজিটাল এখনো চূড়ান্ত লাইসেন্স পায়নি। তাদের স্পন্সর আনিস এ খান জানান, তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি জমা দিয়েছেন এবং এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন।
তাদের পেইড-আপ ক্যাপিটালের মধ্যে ৭২ কোটি টাকা আসবে বিদেশি বিনিয়োগকারীর প্রযুক্তি সহায়তা হিসেবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতের আশঙ্কা প্রকাশ করে।
“বাংলাদেশ: কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়াগনস্টিক” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অনিয়ম ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশের অন্যতম বাধা।
বিশ্বব্যাংকের দুটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান – ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (IFC) এবং মাল্টিল্যাটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সি (MIGA) – যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করে এবং ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-এ তা প্রকাশ করে।