Tuesday, October 14, 2025

আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারে এক বছরেও অগ্রগতি নেই, ক্ষোভ ও হতাশা পরিবারের


ছবিঃ জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাইদ (সংগৃহীত । ইন্টারনেট)

জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাত বার্ষিকীতে তার পরিবারের সদস্যরা বিচারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না দেখে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। আজ "জুলাই শহীদ দিবস" হিসেবে পালিত হচ্ছে, এই দিনে আবু সাঈদের বড় ভাই ও মামলার বাদী রমজান আলী পীরগঞ্জের মাদখালিতে নিজ গ্রামের বাড়িতে সাঈদের কবরে দোয়া পড়ার পর কান্না ধরে রাখতে পারেননি।

রমজান আলী বলেন, "আমার ভাই বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন, এবং তার এই সংগ্রামের মাধ্যমে এ দেশের মানুষ এক নতুন ধরনের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আজ এক বছর হয়ে গেল, কিন্তু বিচারিক কোনো অগ্রগতি নেই। দেশ ও বিদেশের মানুষ জানে আমার ভাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এই সত্যটা গোপন নয়। তবুও বিচার কোথায়?"

তিনি প্রশ্ন করেন, "এই দুঃখ কার সাথে ভাগ করে নেব? কোথায় যাব? আমার বলার কোনো ভাষা নেই।" তিনি আরও জানান, গত বছর প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। "সবাই এসেছিলেন, সহানুভূতি জানিয়েছেন, এবং আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কেবল একটি জিনিস চাই – আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার। সেই বিচার তো এখনো শুরুই হয়নি।"

রমজান আলী বিশ্বাস করেন, আবু সাঈদের আত্মত্যাগ একটি প্রজন্মকে কথা বলার সাহস জুগিয়েছে। সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, "দেশ বদলে গেছে। সংবিধানেরও পরিবর্তন দরকার। তা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন বা নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা যাবে না। আবু সাঈদ যে আলো জ্বালিয়েছেন, তা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আলো।" 

এদিকে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের  শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মচারীরা আজ সকাল ১০টায় কালো ব্যাজ পরে ক্যাম্পাসে জড়ো হন এবং একটি শোক মিছিল বের করেন। মিছিলটি রংপুর শহরের মডার্ন মোড় এলাকা ঘুরে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। সেখানে একটি সমাবেশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আবু সাঈদ স্মৃতি স্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। অন্যান্য দুটি উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পাসে শহীদ আবু সাঈদ জাদুঘর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে শহীদ আবু সাঈদ স্কয়ার। এই প্রকল্পগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

উল্লেখ্য, আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে এবং প্রসিকিউশন তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে। এতে ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, যার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তবে, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল হয়নি।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন