- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের প্রবল আন্দোলনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হতে হলো। গত সোমবার ও মঙ্গলবার টানা সহিংসতায় অন্তত ৩১ জন নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।
রবিবার এক অনুষ্ঠানে তরুণদের ‘জেন জেড’ আন্দোলনকে ব্যঙ্গ করে ওলি বলেছিলেন, “তারা মনে করছে নিজেদের পরিচয়ে যা খুশি দাবি করতে পারে।” কিন্তু দুই দিনের মাথায় তাঁর সেই মন্তব্যই যেন রাজনৈতিক পতনের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।
৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী কাঠমান্ডুতে কয়েক লাখ তরুণ দুর্নীতি ও ‘নেপো কিডস’ বা স্বজনপ্রীতিতে সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে। বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে পুলিশ গুলি চালায়, যাতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়।
এরপরের দিন নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধরা সংসদ ভবনসহ শীর্ষ কয়েকজন রাজনীতিকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি দেশের সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম কান্তিপুর পাবলিকেশন্স-এর অফিসও ভস্মীভূত হয়।
চাপের মুখে মঙ্গলবার বিকেলে ওলি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে বিক্ষোভকারীরা এখানেই থামেনি। তাঁরা সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি, নতুন নির্বাচনের আয়োজন এবং অন্তর্বর্তী সরকারে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নেপালের এ অস্থিরতা শুধু দেশটির ভেতরেই নয়, বরং ভারত, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কসহ আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা (২০২২) ও বাংলাদেশে (২০২৪) সরকারের পতনের মতো যুব-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নেপাল এখন নতুন মোড়ের দিকে এগোচ্ছে।