- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
চলতি বছর ৪০ বছর পূর্ণ করেছে বিশ্বখ্যাত জাপানি অ্যানিমেশন স্টুডিও স্টুডিও ঘিবলি। মায়াবী বনভূমি, উষ্ণ প্রস্রবণ কিংবা গ্রামীণ দৃশ্য—যা দর্শকদের কল্পনার জগতে নিয়ে গেছে, সেগুলোর অনেকটাই আসলে বাস্তব জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে অনুপ্রাণিত।
দক্ষিণ কিউশুর উপকূলে অবস্থিত ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত ইয়াকুশিমা দ্বীপের শ্যাওলা-ঢাকা প্রাচীন বনভূমি ও হাজার বছরের পুরনো দেবদারু গাছ সরাসরি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে ১৯৯৭ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র প্রিন্সেস মোনোনোকেতে। স্থানীয় গাইড তারো ওয়াতানাবে জানান, আজও অসংখ্য ভক্ত দ্বীপে ছুটে আসেন কেবল চলচ্চিত্রের বাস্তব স্বাদ নিতে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত ক্ষতির কারণে এ বনভূমি এখন ঝুঁকিতে, যা রক্ষায় কাজ করছে সংরক্ষণকর্মীরা।
জাপানের প্রাচীনতম উষ্ণ প্রস্রবণ কেন্দ্রগুলোর একটি দোগো অনসেন। মাদুর-বিছানো কক্ষ, করিডোর আর পাহাড়ি প্যাগোডার মতো ছাদঘর মিয়াজাকির স্পিরিটেড অ্যাওয়ের জাদুকরী স্নানঘরের অনুপ্রেরণা বলে মনে করা হয়। ২০২৪ সালে সংস্কার শেষে এটি নতুন রূপে দর্শক ও ভ্রমণকারীদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশা, এটি মাটসুয়ামার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে টিকে থাকবে।
টোটোরো, ঘিবলির সবচেয়ে প্রিয় চরিত্রগুলোর একটি, যে বনভূমিতে বাস করে সেটি বাস্তবেই রয়েছে। টোকিও ও সায়াতামার সীমান্তে বিস্তৃত সায়ামা হিলস স্থানীয় ভাষায় পরিচিত “টোটোরোর বন” নামে। এখানে স্বেচ্ছাসেবক ও সংরক্ষণ সংস্থা বহু বছর ধরে জমি কিনে বন রক্ষা করছে। কুরোসুকে’স হাউস, ১২০ বছরের পুরনো একটি খামারবাড়ি, টোটোরো ভক্তদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।
সংরক্ষণকর্মী মিয়ে হানাজাওয়া বলেন, “ভ্রমণকারীরা শুধু বনভূমির সৌন্দর্য নয়, এর পেছনের স্বেচ্ছাশ্রম ও স্থানীয় প্রচেষ্টার গল্প জেনে অবাক হন।”
স্টুডিও ঘিবলির ২৩টি চলচ্চিত্র আজ বিশ্বজুড়ে কেবল বিনোদন নয়, প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও কল্পনার মেলবন্ধনের প্রতীক। আর বাস্তব জাপানের এই বন, প্রস্রবণ আর গ্রামগুলো এখনো ধরে রেখেছে সেই অ্যানিমেশনের প্রাণশক্তি।
তথ্যসূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান