- ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও স্টাইল আইকন ডায়ান কিটন আর নেই। ৭৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার নিজের বাসায় গত শনিবার(১১/১০/২০২৫) শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে চলচ্চিত্রজগৎ।
১৯৭০-এর দশকে 'দ্য গডফাদার' সিরিজে কেই অ্যাডামস-কোরলিওনের চরিত্রে অভিনয় করে কিটন প্রথম খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর তিনি একে একে চলচ্চিত্র জগতে নিজের অবস্থান শক্ত করেছিলেন। তাঁর অভিনীত ‘ফাদার অব দ্য ব্রাইড’, ‘ফার্স্ট ওয়াইভস ক্লাব’ এবং বিশেষ করে 'অ্যানি হল' সিনেমাগুলি তাঁকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা এনে দেয়। ১৯৭৮ সালে 'অ্যানি হল' ছবির জন্য তিনি অস্কার লাভ করেন সেরা অভিনেত্রী হিসেবে, যা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সম্মান ছিল।
কিটনের অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ফ্যাশনও ছিল চর্চিত। পুরুষদের পোশাক, চওড়া টুপি এবং নির্ভার হাসির জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। তাঁকে হলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী স্টাইল আইকন হিসেবে বিবেচনা করা হত।
কিটনের অভিনয় ক্যারিয়ার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের। তিনি একাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য ফ্যামিলি স্টোন’, ‘প্লে ইট এগেইন, স্যাম’, ‘ম্যানহাটন’ প্রভৃতি। ১৯৭০ সালে ‘লাভার্স অ্যান্ড আদার স্ট্রেঞ্জার্স’ সিনেমার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয়। তার শেষ কাজ ছিল ২০২৪ সালের ছবি ‘সামার ক্যাম্পে’, যেখানে তিনি ইউজিন লেভি ও ক্যাথি বেটসের সঙ্গে সহ-অভিনয় করেছিলেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি কিটন ছিলেন একজন সফল পরিচালক। ১৯৮৭ সালে তিনি তথ্যচিত্র ‘হেভেন’ পরিচালনা করেন এবং ১৯৯৫ সালে ‘আনস্ট্রাং হিরোস’ ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে নির্বাচিত হয়। ২০০০ সালে তিনি ‘হ্যাংগিং আপ’ ছবিটি পরিচালনা করেন, যেখানে তিনি নিজেও অভিনয় করেন।
ডায়ান কিটনের মৃত্যুতে হলিউডের অনেক তারকা শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর ‘ফার্স্ট ওয়াইভস ক্লাব’ সিনেমার সহ-অভিনেত্রী বেট মিডলার ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, “অসাধারণ, মেধাবী, একেবারে মৌলিক ধারার অভিনেত্রী ডায়ান কিটন আর নেই। এ খবর আমাকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি ছিলেন হাস্যরসিক, আন্তরিক একজন মানুষ।”
অভিনেতা বেন স্টিলার এক্স (টুইটার) এ লিখেছেন, “ডায়ান কিটন চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। স্টাইল, বুদ্ধিমত্তা, রসবোধ সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন এক অনন্য মানুষ।”
ব্যক্তিগত জীবনে কিটন কখনো বিয়ে করেননি, তবে তিনি দুই সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন মেয়ে ডেক্সটার ও ছেলে ডিউক। তাঁর আত্মজীবনী ‘দেন এগেইনে’(২০১১) তে তিনি লিখেছিলেন, “আমার প্রিয়জনেরা যখন খুশি থাকে, তখনই আমি সবচেয়ে সুখী। এমন ভালোবাসা অন্য কেউ পেতে পারে বলে আমি মনে করি না।”
ডায়ান কিটনের মৃত্যু চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর অনবদ্য অভিনয় ও অমলিন স্মৃতি চিরকাল মনে রাখা হবে।