- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
PNN আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, সাম্প্রতিক বৈঠকের পর ভারত ও রাশিয়া যেন চীনের দিকে ঝুঁকেছে বলে মনে হচ্ছে। বেইজিং যখন বৈশ্বিক নতুন শক্তি ভারসাম্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, তখন নয়াদিল্লি ও মস্কোর অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাম্প।
একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিন দেশের নেতাদের একসঙ্গে থাকা ছবি শেয়ার করে ট্রাম্প লেখেন, “মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকে হারালাম চীনের অন্ধকার গভীরে। তাদের দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ কামনা করি।”
তবে একই দিনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প আবার বলেন, তিনি মনে করেন না যে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র হারিয়েছে। প্রেসিডেন্টের ভাষায়, “আমি বিশ্বাস করি না। তবে ভারত যে এত বেশি তেল কিনছে রাশিয়া থেকে—সে বিষয়ে আমি হতাশ। বিষয়টি তাদের জানিয়েছি।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চীনের বন্দরনগরী তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে ২০টির বেশি অ-পাশ্চাত্য দেশের নেতা যোগ দেন। এতে অংশ নেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
সম্মেলনে পুতিন ও মোদিকে পাশাপাশি হাঁটতে এবং পরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একসঙ্গে দাঁড়াতে দেখা যায়।
ভারত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ট্রাম্প মোদির প্রশংসা করেন। “মোদির সঙ্গে সবসময় বন্ধুত্ব থাকবে। তিনি অসাধারণ প্রধানমন্ত্রী। তবে এই মুহূর্তে যা করছেন, সেটা আমার ভালো লাগছে না। তবুও ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক বিশেষ। চিন্তার কিছু নেই,” বলেন তিনি।
মোদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাব দেন। তিনি লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আন্তরিক অনুভূতি ও ইতিবাচক মূল্যায়নকে গভীরভাবে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছি। ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সর্বদা অগ্রগামী ও বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।”
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আসছেন। আক্রমণের তিন বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধ অবসানের কোনো সমাধান তিনি আনতে পারেননি। বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি জানান, শিগগিরই প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীন-ভারত-রাশিয়ার সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স