- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
বাংলাদেশে গুম সংক্রান্ত তদন্তে বড় ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে গুম কমিশন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তাদের বিশ্লেষণে গুমের ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগের মধ্যে অন্তত ২৫৩ জন গুম হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বিচারপতি মইনুল বলেন, “এই গুম ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন ছিল না। বরং বিগত সরকারের শাসনামলে এটি ছিল একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক দমন প্রক্রিয়ার অংশ। ইসলামি উগ্রবাদের হুমকি এবং জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানের ঢাল ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন, ক্ষমতা কেন্দ্রীভূতকরণ ও আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি অর্জনের কৌশল হিসেবে গুমকে প্রয়োগ করা হয়েছে।”
তিনি জানান, গুমের শিকারদের মধ্যে ছিলেন মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তদন্তে উঠে এসেছে, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে তাদের মাধ্যমে গোপনে আটক, নির্যাতন ও নিখোঁজের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে।
আরও বিস্ময়কর তথ্য প্রকাশ করে বিচারপতি মইনুল বলেন, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি উপায়ে ভারতীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটা কেবল কয়েকজন কর্মকর্তার অসাবধানতা নয়। বরং এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত দমনযন্ত্র—যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের অস্ত্রে রূপান্তরিত করেছে।”
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর দেশে-বিদেশে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নজর আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিশনের এই তথ্যপ্রমাণ বিচার ও জবাবদিহির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করতে পারে।
গুম কমিশনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।সংগৃহীত