Friday, December 5, 2025

গুগল প্রধানের সতর্কবার্তা: অতি দ্রুত এআই বিনিয়োগের ফলে বড় অর্থনৈতিক ঝুঁকি


ছবিঃ অ্যালফাবেটের প্রধান সুন্দর পিচাই বর্তমান এআই উত্থানকে ঘিরে কিছু “অযৌক্তিকতা” রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন। (সংগৃহীত । বিবিসি নিউজ)

স্টাফ রিপোর্ট: PNN 

গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই সতর্ক করে বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–নির্ভর বিনিয়োগ এখন যে উচ্চগতিতে বাড়ছে, তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাঁর মতে, এআই বিনিয়োগের বর্তমান উত্তেজনা যেমন অসাধারণ, তেমনি এতে “অযৌক্তিকতার” ছাপও আছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এআই–ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মূল্য আকাশছোঁয়া হয়েছে। অ্যালফাবেটের বাজারমূল্য সাত মাসে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে। এদিকে এনভিডিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গুগলের নিজস্ব সুপারচিপ তৈরির প্রচেষ্টা বাজারে আরও উত্তাপ যোগ করেছে।

তবে বিশাল অংকের বিনিয়োগ বিশেষ করে ওপেনএআই–কে ঘিরে প্রায় ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের আর্থিক চুক্তিগুলো বিশ্লেষকদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে। তাদের মতে, বিনিয়োগের তুলনায় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের হিসাব অনেকটাই অমিল।

পিচাই মনে করেন, বিনিয়োগের চক্র প্রায়ই সীমা ছাড়িয়ে যায়। “ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও প্রচুর অতিরিক্ত বিনিয়োগ হয়েছিল, কিন্তু তার প্রভাব আজও গভীর। এআই ক্ষেত্রেও একইচিত্র দেখা যাবে।”

জেপি মরগান প্রধান জেমি ডাইমন সম্প্রতি জানান, এআই বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে লাভ দেবে, তবে প্রচুর টাকা ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে পিচাইও এ ঝুঁকির সঙ্গে একমত।

গুগল মনে করে, চিপ থেকে ইউটিউব ডেটা, মডেল থেকে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার অনন্য ‘ফুল স্ট্যাক’ কাঠামো তাদের ভবিষ্যৎ ঝাঁকুনিতে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।

পিচাই জানান, অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যে ৫ বিলিয়ন পাউন্ডের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ডিপমাইন্ডসহ এআই গবেষণা অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ। ভবিষ্যতে প্রথমবারের মতো গুগল তাদের এআই মডেলের ট্রেনিং যুক্তরাজ্যেই পরিচালনা করবে যা দেশটির “এআই সুপারপাওয়ার” হওয়ার প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে দেবে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী বিদ্যুতের ১.৫% খরচ হয়েছে এআই প্রযুক্তিতে। পিচাই বলেন, “জ্বালানি অবকাঠামো উন্নয়ন না করলে অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাবে।”
তিনি স্বীকার করেন, এআই–এর বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদার কারণে গুগলের জলবায়ু লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে নিট শূন্য নির্গমন হুমকিতে পড়েছে, তবে লক্ষ্য থেকে তারা সরে আসবেন না।

পিচাই বলেন, এআই মানবজাতির হাতে থাকা সবচেয়ে “গভীর প্রযুক্তি” এবং এটি চাকরি বাজারকে বদলে দেবে। “সমাজকে বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অনেক কাজের ধরন বদলে যাবে, তবে যারা এআই ব্যবহার শিখবে তারা এগিয়ে থাকবে।”

শিক্ষক থেকে শুরু করে চিকিৎসক সব পেশাতেই এআই ভূমিকা রাখবে, এবং ভবিষ্যতে দক্ষতার সংজ্ঞা নির্ধারণে এআই–দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে জানান গুগল প্রধান।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন