- ২০ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি এখন শুধুমাত্র চিকিৎসা বা জলবায়ু পরিবর্তন সমাধানে নয়, বরং খনিজ জ্বালানি ও পরিবেশের ওপরও প্রভাব ফেলছে। বিশেষত, এআই কোম্পানিগুলি এখন বড় ডেটা সেন্টার তৈরি করছে, যেখানে তাদের অধিকাংশ শক্তি সরবরাহের জন্য তারা সরাসরি ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করছে। এই নতুন প্রবণতাটি মূলত পরিবেশবিদদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন তুলেছে এবং তা স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
এটির সবচেয়ে সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো পুলসাইড, একটি এআই কোডিং স্টার্টআপ, যা বর্তমানে পশ্চিম টেক্সাসে ৫০০ একরের উপর একটি ডেটা সেন্টার নির্মাণ করছে। এই সুবিধাটি প্যারামিয়ান বেসিন থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করবে, যা দেশের সবচেয়ে উৎপাদনশীল তেল এবং গ্যাস ক্ষেত্র। এই প্রকল্পটি "হরাইজন" নামে পরিচিত এবং এটি ২ গিগাওয়াট কম্পিউটিং শক্তি উৎপন্ন করবে, যা হুভার ড্যামের পুরো বৈদ্যুতিক ক্ষমতার সমান।
এটি প্রথম নয়, এমনকি অন্যান্য বড় এআই প্লেয়ারও এই পথ অনুসরণ করছে। ওপেনএআই এর প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান সম্প্রতি আবিলিন, টেক্সাসে তাদের স্টারগেট ডেটা সেন্টার পরিদর্শন করেছেন, যেখানে তিনি স্বীকার করেন, "আমরা এই ডেটা সেন্টার চালাতে গ্যাস পোড়াচ্ছি।"
এছাড়া, মেটা সম্প্রতি লুইজিয়ানা রাজ্যের রিচল্যান্ড পারিশে একটি বিশাল ডেটা সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে, যা ১,৭০০ ফুটবল মাঠের সমান জায়গা নিয়ে গড়ে উঠবে এবং ২ গিগাওয়াট শক্তি উৎপাদন করবে। এই ডেটা সেন্টারের জন্য গ্যাস-চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য স্থানীয় গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হবে।
এআই কোম্পানিগুলি নিজেদের শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারকে একটি প্রাকটিক্যাল এবং প্রয়োজনীয় সমাধান হিসেবে দেখছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা, বিশেষ করে ওয়েস্ট টেক্সাসের লোকেরা, নতুন ডেটা সেন্টারগুলো এবং তাদের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। একদিকে, তারা গ্যাস পোড়ানোর ফলে কার্বন নিঃসরণ এবং পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা করছেন, অন্যদিকে তারা বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ এবং পানি সংকটের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
এআই কোম্পানিগুলির এই শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য গ্যাস কেন্দ্রিত প্রকল্পগুলির মধ্যে দ্রুত বিস্তার ঘটছে, যা স্থানীয় জনগণের জন্য বড় ধরনের আর্থিক এবং পরিবেশগত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, এইভাবে ফসিল ফুয়েল ব্যবহার বৃদ্ধি হলে তা ভবিষ্যতে আরও পরিবেশগত বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে, এই কোম্পানিগুলির পরিবেশগত প্রভাব ও কর্মসংস্থান সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলো আরো গুরুত্ব পাচ্ছে, তবে সরকার ও কোম্পানির পক্ষ থেকে এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুব একটা স্পষ্ট হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প শক্তির উৎস যেমন সৌর শক্তি বা নিউক্লিয়ার শক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি আরও গুরুত্ব পেতে পারে, তবে সেটা সময়সাপেক্ষ এবং আরও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন।