- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
খন্দকার শামীম | PNN:
উচ্চশিক্ষা শুধু ব্যক্তির জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ায় না, বরং একটি দেশের উন্নয়ন ও বৈশ্বিক সংযোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশ্বের শীর্ষ দুটি আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম — যুক্তরাজ্যের Chevening Scholarship ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের Erasmus Mundus Joint Master Degrees — বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দিচ্ছে বিশ্বমানের শিক্ষার দরজা।
Chevening Scholarship: যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম
Chevening হলো যুক্তরাজ্য সরকারের একটি ফ্ল্যাগশিপ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, যা মূলত ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও পেশাগত দক্ষতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়।
আয়োজক: UK Foreign, Commonwealth and Development Office (FCDO); অর্থায়ন: সম্পূর্ণ টিউশন ফি, মাসিক ভাতা, বিমান ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ বহন।
যোগ্যতা: বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; অন্তত ২ বছরের পূর্ণকালীন কাজের অভিজ্ঞতা; ইংরেজি ভাষার দক্ষতা (IELTS/TOEFL ছাড়াও অন্যান্য গ্রহণযোগ্য টেস্ট); যুক্তরাজ্যের যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে;
সুযোগ: ৫০টিরও বেশি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা, বিশ্বব্যাপী Chevening Alumni নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ;
ডেডলাইন: সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে আবেদন গ্রহণ।
বাংলাদেশ থেকে ইতোমধ্যে শতাধিক পেশাজীবী এই সুযোগ নিয়ে বিশ্বমঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
Erasmus Mundus: ইউরোপে একাধিক দেশে পড়াশোনার সুযোগ
Erasmus Mundus Joint Master Degrees (EMJMD) ইউরোপীয় কমিশনের অর্থায়নে পরিচালিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা একই প্রোগ্রামের আওতায় অন্তত দুইটি দেশে পড়াশোনার সুযোগ পান।
আয়োজক: European Education and Culture Executive Agency (EACEA);
অর্থায়ন: সম্পূর্ণ টিউশন ফি, মাসিক ভাতা (€1,000 পর্যন্ত), ভ্রমণ ও স্থাপন খরচ বহন;
যোগ্যতা: স্নাতক ডিগ্রি বা সমমানের যোগ্যতা; ভালো একাডেমিক রেজাল্ট; ইংরেজি বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভাষায় দক্ষতা।
সুযোগ: একাধিক ইউরোপীয় দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা; বহুজাতিক সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা; বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরির সুযোগ।
ডেডলাইন: প্রোগ্রামভেদে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী Erasmus স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ পান।
শিক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ:
সম্ভাবনা:
আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণায় দক্ষতা অর্জন;
বিশ্বব্যাপী পেশাগত নেটওয়ার্ক ও দেশে ফিরে নীতি প্রণয়ন, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও
আইনি খাতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ।
চ্যালেঞ্জ:
আবেদন প্রক্রিয়ার প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি;
ইংরেজি দক্ষতা প্রমাণ ও শক্তিশালী SOP (Statement of Purpose) প্রস্তুত করা ও
প্রয়োজনীয় কাজের অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক প্রোফাইল তৈরি।
Chevening ও Erasmus Mundus শুধু স্কলারশিপ নয়, বরং ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের চাবিকাঠি। যারা উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান, তাদের জন্য এই দুটি সুযোগ হতে পারে জীবন পরিবর্তনের সিঁড়ি।
তথ্যসূত্র:
https://erasmus-plus.ec.europa.eu