Tuesday, October 14, 2025

২ বিলিয়ন ডলারের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে পরিশোধের পর রিজার্ভ কমলো, উদ্বেগ বাড়ছে অর্থনীতিবিদদের


ফাইল ছবিঃডলার (সংগৃহীত । ইন্টারনেট)

মে ও জুন মাসের আমদানি বিল বাবদ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) রেকর্ড ২০১ কোটি ডলার পরিশোধের পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। এই অর্থ পরিশোধের ফলে সোমবার মোট রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৯৫২ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা গত বুধবার ছিল ৩১ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১৭১ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আমদানি বিলের দায়ের বিপরীতে আকুতে ২০১ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ গ্রহণের কারণে জুন মাস শেষে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ৩১.৭২ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল, যা গত ২৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। এর আগে ২০২৩ সালের মার্চের শুরুতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল এবং ওই মাসের ১৫ তারিখে সর্বোচ্চ ৩১.২৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। এরপর প্রায় সব সময়ই এটি ৩১ বিলিয়নের নিচে ছিল।

গ্রস রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি, আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৬.৬৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল, যা এই পদ্ধতি মেনে হিসাব প্রকাশের পর থেকে সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রস রিজার্ভের পাশাপাশি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করা শুরু করে।

আকু হলো এশিয়ার কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যকার একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিব্যবস্থা। এর মাধ্যমে এশিয়ার ৯টি সদস্য দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ) মধ্যে আমদানি-রপ্তানির মূল্য প্রতি দুই মাস অন্তর নিষ্পত্তি করা হয়। অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়।

সংশ্লিষ্টদের মতে, রিজার্ভ বৃদ্ধির মূল কারণ ছিল অর্থ পাচারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। হুন্ডি প্রবণতা কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি।

এছাড়াও, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সরকার ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি কম সুদের ঋণ পেয়েছে। এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে ডলারের বাজার বর্তমানে ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন