- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিদিনই এক ধরণের স্ক্যাম ম্যাসেজ পৌঁছে, যেখানে বলা হয় অবৈতনিক টোল ফি বা ডেলিভারি না হওয়া মেল আইটেমের কথা। এই ধরনের ম্যাসেজ দিয়ে একটি বড় স্ক্যামিং অপারেশন চলছিল, যা ব্যবহারকারীদের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করতো।
২০২৪ সালে মাত্র সাত মাসের মধ্যে এই স্ক্যাম থেকে অন্তত ৮৮৪,০০০টি কার্ডের তথ্য চুরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়। অনেক ভুক্তভোগী হাজার হাজার ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছেন। স্ক্যামটি খুব জটিল না হলেও খুব কার্যকর ছিল। প্রতারণাকারীরা বিভিন্ন জনপ্রিয় সেবা, যেমন ডাকসেবা বা স্থানীয় সরকারি প্রোগ্রামের নাম ভেবে স্প্যাম টেক্সট পাঠিয়ে ভুক্তভোগীদের ফিশিং পেজে নিয়ে যেত এবং সেখানে কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করত।
নরওয়ের সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ম্নেমোনিকের অনুসন্ধানে প্রকাশ পায়, এই স্ক্যামিং সফটওয়্যারের নির্মাতা একজন চীনা নাগরিক যুবক, যার নাম ইউচেং সি। তিনি ‘ডার্কুলা’ নামে পরিচিত এবং তার তৈরি ‘ম্যাজিক ক্যাট’ নামের সফটওয়্যার দিয়ে শত শত গ্রাহক তাদের নিজস্ব স্ক্যাম প্রচার চালাতো।
ডার্কুলার পরিচয় ফাঁস হওয়ার পর তার স্ক্যাম অপারেশন বন্ধ হয়ে যায়, তবে তার জায়গায় উঠে এসেছে ‘ম্যাজিক মাউস’ নামে নতুন একটি স্ক্যামিং অপারেশন, যা আগেরটির থেকেও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ম্নেমোনিকের সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হ্যারিসন স্যান্ড জানিয়েছেন, ‘ম্যাজিক মাউস’ প্রতি মাসে অন্তত ৬৫০,০০০টি কার্ডের তথ্য চুরি করছে এবং এটির স্ক্যামিং ক্ষমতা আগের থেকে অনেক বেশি। তারা এই অপারেশন নিয়ে সিকিউরিটি সম্মেলনে নতুন তথ্য প্রকাশ করবেন।
তদন্তে পাওয়া যায়, ‘ম্যাজিক ক্যাট’ ও ‘ম্যাজিক মাউস’ উভয় অপারেশনেই ব্যবহৃত হয় এক ধরনের ফিশিং কিট, যা ভুক্তভোগীদের টার্গেট করে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ও সেবাগুলোর জাল ওয়েবসাইট বানিয়ে কার্ড তথ্য হাতিয়ে নেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও স্ক্যামটি ব্যাপক হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও ব্যাপকভাবে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ জন্য অনেকটাই দায়ী বড় প্রযুক্তি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা কার্ড চুরির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্বস্ত উৎস থেকে অচেনা কোনো টেক্সট পেলে তা উপেক্ষা করাই সর্বোত্তম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এই ধরনের স্ক্যাম থেকে বাঁচার সবচেয়ে সহজ পথ হলো সচেতনতা ও সজাগ থাকা।
সুত্রঃ টেকক্রাঞ্চ