- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
ভারতের দিল্লির গুরুগ্রামে টেনিস খেলাকে কেন্দ্র করে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছে পিতৃ-সন্তানের দ্বন্দ্ব। জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় ও একাডেমি পরিচালনাকারী ২৫ বছর বয়সী রাধিকা যাদবকে গুলি করে হত্যা করেছেন তার বাবা দীপক যাদব (৫৭)। শুক্রবার সকালে গুরুগ্রামের সুশান্ত লোক ফেজ ২–এ নিজ বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
পুলিশ জানায়, মেয়ের টেনিস একাডেমি চালানো এবং একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশগ্রহণ করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দীপক যাদবের মধ্যে ক্ষোভ জমে উঠেছিল। প্রতিবেশীদের কটাক্ষ ও ‘সম্মানহানির’ অভিযোগে দীপক রাধিকাকে একাধিকবার একাডেমি বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও রাধিকা তা মানেননি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি মেয়ের ওপর পাঁচটি গুলি ছোঁড়েন, যার তিনটি গুলি রাধিকার শরীরে বিদ্ধ হয়।
তত্ক্ষণাত্ রাধিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে হত্যায় ব্যবহৃত একটি .৩২ বোর রিভলবার জব্দ করে এবং দীপক যাদবকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
দীপক পুলিশকে জানান, তার পৈতৃক গ্রাম ওয়াজিরাবাদে গেলে অনেকেই মেয়ের জীবনযাপন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করত, যা তিনি অপমান হিসেবে নিয়েছিলেন। মেয়েকে একাধিকবার থামাতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভের বশেই তিনি এ কাণ্ড ঘটান।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাধিকার এক বছর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কারওয়ান’ নামে একটি মিউজিক ভিডিওতেও অভিনয় করা তার বাবাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ভিডিওটিতে রাধিকাকে শিল্পী ইনআমের সঙ্গে বিভিন্ন দৃশ্যে দেখা যায়, যা দীপক মেনে নিতে পারেননি।
রাধিকার চাচা ও দীপকের ছোট ভাই হত্যার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, একই বাড়ির আলাদা তলায় থাকতেন তারা। গুলির শব্দ শুনে উপরের তলায় গিয়ে রান্নাঘরে রাধিকাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পান। পাশেই ড্রয়িংরুমে রিভলবারটি পড়ে ছিল।
গুরুগ্রাম পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে সামাজিক চাপ, মানসিক সংকট ও সম্মান রক্ষার扮 চরিত্রে একটি নির্মম মনোভাব কাজ করেছে। পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্তাধীন রয়েছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।