- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির প্রথম পূর্ণ-মেয়াদের কোচ বব সিম্পসন সিডনিতে ৮৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব সিম্পসন ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত ৬২ টেস্ট খেলেছেন। তিনি ৪৬.৮১ গড়ে ৪,৮৬৯ রান সংগ্রহ করেন এবং ৭১ উইকেট নেন। দুর্দান্ত স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে তাঁর ক্যারিয়ারে ১১০টি ক্যাচও আছে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তিনি লেগ স্পিনও করতেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর রান ২১,০২৯ এবং উইকেট ৩৪৯।
সিম্পসন প্রথমবার ১৯৬৮ সালে অবসর নেন, কিন্তু ১৯৭৭ সালে ৪১ বছর বয়সে আবার টেস্ট দলে ফিরে আসেন। ভারতের বিপক্ষে ঘরে এবং পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে দলের নেতৃত্ব দেন। অধিনায়ক হিসেবে তিনি মোট ৩৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টেস্টে ১০টি সেঞ্চুরি সবই অধিনায়ক হিসেবে এসেছে। ১৯৬৪ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর গড় ছিল ৫৪.০৭।
খেলোয়াড় হিসেবে সফলতার পাশাপাশি কোচ হিসেবে সিম্পসন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৮৬ সালে কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের সঙ্গে মিলিত হয়ে দলের সংস্কৃতি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবার বিশ্বকাপ জিততে সক্ষম হয়। ১৯৮৯ সালে অ্যাশেজ এবং ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টেস্টে বিশ্বের এক নম্বর আসনে অস্ট্রেলিয়াকে পৌঁছে দেন।
সিম্পসনের যুগে নেটে উঠে আসেন ডেভিড বুন, ডিন জোন্স, স্টিভ ওয়াহ, ক্রেইগ ম্যাকডারমট, মার্ভ হিউজ, শেন ওয়ার্ন, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন, ডেমিয়েন মার্টিন, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও রিকি পন্টিং। কোচ হিসেবে তিনি ফিল্ডিং ও ফিটনেসকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেন।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোচের দায়িত্ব শেষের পর সিম্পসন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেট, ভারতের রঞ্জি ট্রফিতে রাজস্থান দল এবং নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবেও কাজ করেন। তাঁর নেতৃত্বে নেদারল্যান্ডস খেলেছিল ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে ভারতের পরামর্শকও ছিলেন তিনি।
বব সিম্পসন ১৯৭৮ সালে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হন এবং ২০০৭ সালে তা উন্নীত হয় অফিসার অব দ্য অর্ডারে। ১৯৬৫ সালে উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন এবং তিনি আইসিসি ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অফ ফেমে আছেন।
সিম্পসনের চলে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট একটি যুগান্তকারী ব্যক্তিত্বকে হারালো।