- ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
নারী কোপা আমেরিকার ফাইনালে এক রুদ্ধশ্বাস নাটকের জন্ম দিলো ব্রাজিল ও কলম্বিয়া। অতিরিক্ত সময়ে গোল, শেষ মুহূর্তের সমতা, টাইব্রেকারের উত্তেজনা—সবকিছুর মাঝে একটাই নাম উচ্চারিত হলো বারবার, মার্তা। ৩৯ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি ফুটবলার শেষ কোপা খেলতে নেমে যেন নিজের পুরনো জাদুতে মুগ্ধ করলেন পুরো মহাদেশকে।
সান্তা ফেতে অনুষ্ঠিত এই শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুই দল মিলে গোল করলো ৬টি। ম্যাচের শেষদিকে কলম্বিয়া যখন ৩-২ গোলে এগিয়ে, তখন যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে এসে মাঠ কাঁপিয়ে দেন মার্তা। ডান প্রান্ত থেকে কাট করে ঢুকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে সমতায় ফেরান ব্রাজিলকে।
অতিরিক্ত সময়েও থামেননি মার্তা। ১০৬তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় এনে দেন ব্রাজিলের লিড—৪-৩। কিন্তু দমে যায়নি কলম্বিয়াও। ১১৫ মিনিটে তারা ম্যাচে ফেরে, স্কোরলাইন ৪-৪। শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
সেখানেও নাটকের শেষ নেই। প্রথম তিন শটে দুই দলই সমান তালেই এগোতে থাকে। মার্তা চতুর্থ শটে এগিয়ে এসে গোল করতে ব্যর্থ হন। দর্শকরা ধাক্কা খায়। কিন্তু লোরেনার সেভ এবং পরবর্তী শ্যুটারদের নির্ভুলতায় ব্রাজিল শেষ হাসি হাসে—৫-৪ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে নবমবারের মতো কোপা শিরোপা ঘরে তোলে।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মার্তা। যদিও তিনি নিজের ভুলের কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন, "আমার সুযোগ ছিল ম্যাচ সেখানেই শেষ করে দেওয়ার, কিন্তু আমি ব্যর্থ হই। কিন্তু এই অসাধারণ দল আমাকে ভেঙে পড়তে দেয়নি। আজকের জয় আমাদের সবার, এবং আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আবেগময় মুহূর্তগুলোর একটি।"
২০০৬ সালে সর্বশেষ কোপা ফাইনালে হেরেছিল ব্রাজিল। এরপরের প্রতিটি ফাইনালেই তারা অপ্রতিরোধ্য থেকেছে। অন্যদিকে কলম্বিয়া শেষ পাঁচ আসরে চারবার ফাইনালে উঠে প্রতিবারই হেরেছে ব্রাজিলের কাছে—দুর্ভাগ্য যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না।
কিন্তু রাতটা ছিল মার্তার। একজন কিংবদন্তি যখন ফিরে এসে নিজের শেষ নৃত্যটায় সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে, তখন তা ইতিহাস হয়ে থাকে। ৩৯-এর মার্তা সেটাই করে দেখালেন—ফুটবল বিশ্ব তাকে মনে রাখবে আরও বহু বছর।