Sunday, October 26, 2025

বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে দুই-তিন দিনের মধ্যে স্থায়ী কমিটির বৈঠক


প্রতীকী ছবিঃ বিএনপি (সংগৃহীত)

PNN নিউজ ডেস্ক | ঢাকা

জুলাই সনদের অধ্যায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছালেও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনো উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তবে এর মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) পূর্ণমাত্রায় নির্বাচনী তৎপরতায় মনোনিবেশ করেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই শতাধিক আসনে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ প্রায় শেষ, এবং আগামী স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, “আমরা দুই শতাধিক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। খুব শিগগির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তাঁদের নির্বাচনপ্রস্তুতির জন্য গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হবে। দুই–তিন দিনের মধ্যেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।”

দলীয় সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের ৫০টির মতো আসনসহ প্রায় ১৫০টি আসনে প্রার্থী বাছাইয়ে তেমন জটিলতা নেই, তবে ৬০ থেকে ৭০টি আসনে তীব্র প্রতিযোগিতা ও স্থানীয় দ্বন্দ্বের কারণে প্রার্থী নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে একাধিক জনমত জরিপের মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করেছেন। প্রায় ১০০টি আসন ‘ঝামেলাপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে একাধিক শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। এসব আসনে একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে ঢাকায় ডেকে প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ নেতারা।

দলীয় বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, তারেক রহমান সম্প্রতি অনেক সম্ভাব্য প্রার্থীকে সরাসরি ফোন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। প্রার্থীদের বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার আগে পর্যন্ত নিজেদের নাম প্রকাশ না করতে।
ফলে কিছু এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলেও দলীয় মনোনয়ন বোর্ডই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে নিশ্চিত করেছেন নেতারা।

বিএনপির নির্বাচনী কৌশলে এবারও শরিক দলগুলোর সঙ্গে আসন বণ্টন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২–দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলিডিপি, গণফোরাম ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি দল বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী।
এছাড়া জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর উদীয়মান দলগুলো, যেমন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণ অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসকেও বিএনপি পাশে পেতে চায়।

তবে বিএনপির হিসাব অনুযায়ী, এসব শরিক দল থেকে সর্বোচ্চ ২০টি আসনে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যেতে পারে। ফলে শরিকদের জন্য কত আসন ছাড়বে বিএনপি, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এবারের নির্বাচনে এক পরিবার থেকে একজন প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
এ কারণে স্থায়ী কমিটির অনেক জ্যেষ্ঠ নেতার স্ত্রী, সন্তান বা ভাইদের প্রার্থী না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন—গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও তাঁর পুত্রবধূ নিপুণ রায় চৌধুরী, মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাঁর ভাই মির্জা ফয়সাল আমিন—একই পরিবার থেকে একজনই প্রার্থী হবেন।

তবে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার মোট প্রার্থীর অন্তত ৫ শতাংশ নারী হতে হবে, ফলে ব্যতিক্রমও ঘটতে পারে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই বিএনপির প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ হতে পারে।
এদিকে নির্বাচনী এলাকায় মাঠে সক্রিয় হতে বলা হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের, এবং দলীয় পর্যবেক্ষকরা তাঁদের কর্মকাণ্ড নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন।

Super Admin

PNN

প্লিজ লগইন পোস্টে মন্তব্য করুন!

আপনিও পছন্দ করতে পারেন