- ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
বিএনপি গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদে থাকা 'দলঘনিষ্ঠদের' বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়। পরদিনই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে একই বিষয় উত্থাপন করেন।
বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বৈঠকে বিএনপি যেভাবে 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা' এবং 'দলঘনিষ্ঠ' উপদেষ্টাদের সরানোর বিষয় তুলেছে, তা নিয়ে এনসিপি নেতারা তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
এনসিপির আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বৈঠকে জানান, বিএনপি 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার' নয়, বরং অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। তবে এনসিপির নেতারা দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি গণ-অভ্যুত্থানের সরকার, যার ম্যান্ডেট হলো সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। তাদের মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় সরকারের অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শটি একটি দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ।
বৈঠকে বিচার, জুলাই সনদ এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এনসিপি নেতারা জানায়, তারা বিচার কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের হুমকি, নির্বাচন কমিশনের সংস্কারসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
এছাড়া, বিএনপির দাবি অনুযায়ী, ছাত্র উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এনসিপি নেতাদের মতে, এটি শুধু ছাত্র উপদেষ্টাদের নয়, অন্যান্য দল ও গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী উপদেষ্টাদের ক্ষেত্রেও হতে হবে।
এনসিপির পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তারা মনে করছে, ইসির বর্তমান আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট এবং নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রশাসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা চলছে এবং তা সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তিনি বলেন, "সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নিন, এবং যারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন।"
এনসিপি নেতারা এই বৈঠকে নিশ্চিত করেছেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে তারা সুনির্দিষ্ট নিশ্চিততা চেয়েছেন এবং জনগণের মতামত ও গণভোটের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার পক্ষে।