- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | PNN:
বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে গত পাঁচ মাস আগে। তবে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা দুই হাজারের কম রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্টারলিংকের মোট গ্রাহক ছিলেন ১ হাজার ৮৬২ জন, যার মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ১ হাজার ২৫১ জন।
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতাদের মধ্যে একটি। দেশে স্টারলিংকের আগমন দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফল। গত বছরের গণ–অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর কার্যক্রমে গতি আসে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মার্চে নির্দেশ দেন, ৯০ দিনের মধ্যে সেবা চালু করতে। সেই অনুযায়ী ২০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা শুরু হয়।
প্রযুক্তিভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা Rest of World-এর তথ্যমতে, স্টারলিংক বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক সেবা চালু হয়। আফ্রিকার ২০টির বেশি দেশেও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কেনিয়ায় ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০ মাসে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ হাজার, আর নাইজেরিয়ায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৫৯ হাজার ৫০০ গ্রাহক সংযুক্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশে কম গ্রাহকসংখ্যার বিষয়ে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, “স্টারলিংক যেসব সুবিধা দিচ্ছে, তার তুলনায় গ্রাহক সংখ্যা এখনও খুবই কম।”
বিটিআরসি জানায়, বর্তমানে স্টারলিংকের দুটি গেটওয়ে কালিয়াকৈর এবং যশোর ও রাজশাহীতে একটি করে স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সৈয়দপুর, কক্সবাজার, সিলেট ও কুমিল্লায় নতুন গেটওয়ে স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে স্টারলিংক ৮০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ নিয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে ৩০ জিবিপিএস ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে আইনানুগ আড়িপাতা ব্যবস্থার জন্য স্টারলিংকের প্রদত্ত মনিটরিং টুল প্রত্যাশিতভাবে কাজ করছে না। বিটিআরসি এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এই বিষয়ে আলোচনা করছে। এছাড়াও স্টারলিংক বাংলাদেশ থেকে প্রতিবেশী দেশে ব্যান্ডউইডথ বিক্রি ও বাণিজ্যিক সেবা চালুর অনুমোদন চেয়েছে, তবে কমিশনের বর্তমান গাইডলাইনে এমন ব্যবস্থার কোনো বিধান নেই।
বিদেশি গ্রাহক বা রোমিং ব্যবহারকারীরা বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবহার করছে কি না—এ বিষয়েও স্টারলিংককে স্পষ্টতা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন অধ্যায় শুরু হলেও, প্রযুক্তি খাতে স্টারলিংকের প্রকৃত বাজার সম্ভাবনা কতটা পূরণ হবে, তা সময়ের সঙ্গে পরিস্কার হবে।