- ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক |PNN
যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকার বন্ধের (শাটডাউন) কারণে বিমান চলাচলে ব্যাপক অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। রবিবার দেশজুড়ে ৩,৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, আর প্রায় ১০ হাজার ফ্লাইট বিলম্বে পরিচালিত হয়েছে।
পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সতর্ক করে বলেছেন, শাটডাউন চলতে থাকলে থ্যাংকসগিভিং ছুটির সময় বিমান ভ্রমণ “প্রায় স্থবির” হয়ে পড়তে পারে। তিনি জানান, “যতদিন বিমান নিয়ন্ত্রকদের বেতন না দেওয়া হয়, পরিস্থিতি কেবল আরও খারাপ হবে।”
সরকারি অচলাবস্থা ৪০তম দিনে গড়িয়েছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বাজেট বিল নিয়ে অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলেও রবিবার রাতে দুই দল সাময়িক অর্থায়ন চুক্তিতে উপনীত হয়েছে, যা জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত সরকারের কার্যক্রম চালু রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) গত সপ্তাহে এয়ার ট্রাফিক কমানোর নির্দেশ দেয়, কারণ অনেক বিমান নিয়ন্ত্রক কর্মী দীর্ঘদিন বেতনহীন অবস্থায় কাজ না করে বিশ্রামে যাচ্ছিলেন। প্রায় ১৩,০০০ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে “আবশ্যক কর্মী” হিসেবে বেতন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে ১ অক্টোবর থেকে।
FAA জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ৪ শতাংশ কমানো হয়েছে। সোমবার থেকে এই হার ৬ শতাংশে পৌঁছাবে, বৃহস্পতিবার ৮ শতাংশ এবং শুক্রবার ১০ শতাংশ পর্যন্ত সীমিত করা হবে।
২০২৪ সালের থ্যাংকসগিভিং সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮ কোটি মানুষ ভ্রমণ করেছিলেন। শুধু উৎসব-পরবর্তী রবিবারে বিমানবন্দরে ৩.০৯ মিলিয়ন যাত্রী স্ক্রিনিং করা হয়, যা একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড। ফলে চলতি শাটডাউন চলতে থাকলে এ বছরের ভ্রমণ বিশৃঙ্খলা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
FAA জানিয়েছে, ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেক বিশ্লেষক সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে এটি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে “ইচ্ছাকৃত সীমাবদ্ধতা” হতে পারে।
বিমান শিল্প বিশ্লেষক রিচার্ড আবুলাফিয়া বলেন, “যদি সত্যিই কর্মীরা বেতন না পাওয়ার কারণে কাজ বন্ধ করে দেন, তাহলে শাটডাউন শেষ হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু FAA এখনো নিরাপত্তা তথ্য প্রকাশ করেনি—যা জনসাধারণের সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলছে।”
এদিকে, সিনেটে ৬০-৪০ ভোটে বিল পাসের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হলেও এটি কার্যকর হতে হলে প্রতিনিধি পরিষদের অনুমোদন ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষর প্রয়োজন।
ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আকাশপথে ভ্রমণ যে সীমিত পর্যায়েই থাকবে, সে বিষয়ে সংশয় নেই।